চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

ফেসবুকে পরকীয়া ভাইরাস

নারগিস সোমা

২৪ জুলাই, ২০১৯ | ১:১৪ পূর্বাহ্ণ

ম্যাসেঞ্জারের টুক্ শব্দটার অপেক্ষা করেন না এমন মানুষের সংখ্যা বর্তমান সমাজে খুব কম। আমরা যেন দিন দিন ফেইসবুককে জীবনসঙ্গী করে নিচ্ছি, তার কারণ কি? সবার ব্যস্ততা? নাকি নিজের মনের চাহিদা পূরণ?
একজন বিবাহিত মানুষ আর আরেকজন অবিবাহিত মানুষ কারো চাহিদা কারো চেয়ে কম নয়। অবিবাহিত মানুষ হয়তো কাজের ব্যস্ততার কারণে জীবনসঙ্গী কিন্বা পছন্দের মানুষকে খুঁজে পাবার জন্য ম্যাসেঞ্জারের টিক্ শব্দের অপেক্ষা করেন কিন্তুু বিপরীত মানুষটার অপেক্ষা কিসের?
তাহলে কি মানুষ তার গতানুগতিক জীবনসঙ্গীর সাথে জীবনযাপনে হাঁপিয়ে উঠেছে নাকি ঋতুর পরিবর্তনের সাথে, সময়ের পরিবর্তনের সাথে তার সবকিছুর পরিবর্তন? এ চাওয়ার কারণ কি তা তো আমরা কখনো ভাবছি না। একজন বিবাহিত মানুষের একই রুটিন যেমন সকালে ঘুম থেকে ওঠা, নাস্তা করা, অফিস যাওয়া আবার বাড়িতে ফিরে এসে ঘুমিয়ে পড়া, আরেকজনের নাস্তা তৈরি, রান্না করা, কারো অপেক্ষা করা তারপর ঘুম। একটা রুটিন বাধা জীবন। আমরা সবকিছুতে নতুনত্ব খুঁজি এটা সব কিছুতেই। একঘেঁয়েমি জীবনে যখন কোন নতুন অপরিচিত মানুষের ছবি সামনে আসে মোবাইলের ফেইসবুকের পেজে তখন অবচেতন মন থেকেই তৈরি হয় তাকে জানার ইচ্ছা। জানার ইচ্ছাটা কারো প্রকট হয় কারো অল্প।
অল্পতা কিছুূদিনে হারিয়ে যায় কিন্তু প্রকট ইচ্ছেগুলো দিন দিন ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করে। বিবাহিত মানুষটি জড়িয়ে যায় নতুন কোন সম্পর্কে আর অবিবাহিত ব্যক্তিটি জড়িয়ে যায় নতুন কোন জীবনের সাথে। তা তার জন্য কখনও হতে পারে কল্যাণকর কখনো বা অকল্যাণকর।
আমরা কেন নতুন জীবনে জড়াই এটা কি আমরা ভেবে দেখেছি? না দেখিনি। জীবনে যখন কোন ঘাটতি থাকে সেই ঘাটতি থেকে জন্ম নেয় ঘাটতি পূরণের উৎস খুঁজে বেড়ানো। সে উৎস শারীরিকও হতে পারে অথবা মানসিকও হতে পারে।
একজন বিবাহিত মানুষের শারীরিক ঘাটতি কেন থাকবে এটা প্রশ্ন আসতে পারে মনে।
প্রতিটি মানুষের মনের আর শারীরিক একটা চাহিদা থাকে সে যেমনভাবে চায় তার সঙ্গিনী সেভাবে তার চাহিদা পূরণ করতে পারছে না ফলে তৈরি হচ্ছে ঘাটতি পূরণের আকাংক্সক্ষা। শূন্যস্থান কখনো ফাঁকা থাকে না তা মন হোক কিন্বা জমিন, কিছু পূণর্তা দৃশ্যমান কিছু দৃষ্টিগোচর হয় না।
ফেইসবুক অনেক সহজ একটা মাধ্যম এবং নিরাপদ। এর মাধ্যমে খুব সহজেই সমাজের চোখকে ফাঁকি দেওয়া যায় আর এজন্য বেশিভাগ মানুষ তার ঘাটতি পূরণের মাধ্যম হিসেবে বেছে নিয়েছে ফেইসবুক।
আমাদের এই সমস্যাগুলো আমাদের নিজেদেরকেই সমাধান করতে হবে। সংসার নামের পুস্তকে শুধু নিজে নাম লিখলে হবে না সেই পুস্তকের প্রতিটি পাতা সাজাতে হবে ভালোবাসা দিয়ে, একজন আরেকজনকে বুঝতে হবে, বুঝলে জানলে সর্ম্পকগুলো সহজ হয়, আর কম হয় দূরত্ব।
্েফইসবুক কখনো খারাপ না, খারাপ আমাদের একে ব্যবহারের ধরন, আমরা যেমন হারিয়ে যাওয়া বন্ধুটিকে খুঁজে পাই ফেইসবুকের মাধ্যমে তেমনি অনেকে খুঁজে পায় তার পছন্দের মানুষটিকে।
আমরা ঘরে বসে একঘেঁয়েমি রুটিন অনুসরণ না করে রুটিনে পরিবর্তন আনতে হবে আলোচনা করে, জীবনতো আমাদের। সেটাকে সুন্দরভাবে সাজানোর দাায়িত্বটাও আমাদের।
সব ভাইরাসের যেমন এ্যান্টিবায়োটিক আছে তেমনি ফেইসবুক পরকীয়া ভাইরাসের এ্যান্টবায়োটিক হলো পরিবার-পরিজনকে ভালোবাসা ও শুধু নিজের কথা না ভেবে পরিবার-পরিজন, সন্তান-সন্ততির কথা চিন্তা করা, জীবনসঙ্গীর প্রতি বিশ^স্ত থাকা ও ধর্মীয় বিধি-নিষেধ মেনে চলা। আর একটা কথা মনে না রাখলেই নয়-ভালোবাসা ছাড়া কোন সম্পর্ক সুখের হয় না …!

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট