চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

২০২৩ সালের মধ্যে সব প্রা. স্কুলে একবেলা খাবার

নিজস্ব প্রতিবেদক , ঢাকা অফিস

২০ আগস্ট, ২০১৯ | ২:৪২ পূর্বাহ্ণ

 

প্রাথমিক স্কুল থেকে শিশু শিক্ষার্থীদের ঝরেপড়া রোধ করতে প্রতিটি সরকারি স্কুলে একবেলার খাবার সরবরাহ নিশ্চিত করার উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার। স্কুলে খাবার দেওয়ার মাধ্যমে শিশুদের ঝরেপড়া রোধ করতে পরিচালিত কর্মসূচি সফল হওয়ায় সরকার এই উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে। এই উদ্যোগের আওতায় ২০২৩ সালের মধ্যে দেশের প্রতিটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দুপুরের খাবার নিশ্চিত করতে চায় সরকার। গতকাল তেজগাঁওয়ে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ সংক্রান্ত ‘জাতীয় স্কুলমিল নীতি ২০১৯’ নীতিমালার খসড়ায় অনুমোদন করে মন্ত্রিসভা। প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয় মন্ত্রিসভার বৈঠকের পরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম। তিনি বলেন, বিদ্যালয়ে ঝরে পড়া রোধে সরকার ২০০১ সালে স্কুলে স্কুলে খাবার সরবাহের কর্মসূচি হাতে নেয়। সেই উদ্যোগ সফল হওয়ায় দেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। প্রাথমিক পর্যায়ে চরাঞ্চল ও দুর্গম এলাকায় এই প্রকল্প শুরু করা হবে।
জাতীয় স্কুলমিল নীতিমালা অনুযায়ী, এই কর্মসূচির আওতায় ৩ থেকে ১২ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের দৈনিক চাহিদার ৩০ শতাংশ ক্যালরি পূরণের উপযোগী খাবার সরবরাহ করা হবে। এতে স্কুল মিলের জন্য শিক্ষার্থীপ্রতি খরচ হবে সর্বোচ্চ ২৫ টাকা। এর মধ্যে বিস্কুটের জন্য খরচ করা হবে ৯ টাকা। আর রান্না করা খাবারে খরচ হবে ১৬ থেকে ১৮ টাকা। বিস্কুট-কলা-ডিম দিলে খরচ হবে ২৫ টাকা। প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের জন্য এই খাবার সরবরাহ ও দেখভালের জন্য জাতীয় স্কুল মিল কর্মসূচি কর্তৃপক্ষ থাকবে, একটি উপদেষ্টা কমিটিও থাকবে। পাশাপাশি বিভাগ, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে স্কুল মিল বাস্তবায়নের জন্য থাকবে পরিচালনা কমিটিএই কাজে শিক্ষা কর্মকর্তাদের সঙ্গে থানা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানও যুক্ত থাকবেন।

ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা (উন্নয়ন) বিষয়ক অতিরিক্ত সচিব গিয়াস উদ্দীন আহমেদ। তিনি বলেন, ২০০১ সাল থেকে এই কর্মসূচি শুরু হয়। এই কর্মসূচির আওতায় বর্তমানে ১০৪টি উপজেলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে দুপুরের খাবার সরবরাহ করা হয়। যেসব স্কুলে এই কর্মসূচি চলছে, সেখানে শিশু শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার হার কমেছে। সেই অভিজ্ঞতা নিয়েই নতুন এই কার্যক্রম শুরু করা হবে জানিয়ে গিয়াস উদ্দীন আহমেদ বলেন, ২০২৩ সালের মধ্যে দেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশুরা দুপরে রান্না করা পুষ্টিকর খাবার পাবে। তিনি আরও বলেন, এলাকা অনুযায়ী খাবার ভিন্নও হতে পারে। আবার প্রতিদিনই একই খাবার দেওয়া হবে না, খাবারে বৈচিত্র রাখার চেষ্টা করা হবে। অতিরিক্ত এই সচিব জানান, বর্তমানে সারাদেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৬৬ হাজার, শিক্ষার্থী সংখ্যা এক কোটি ৪০ লাখ। বর্তমানে ১০৪টি উপজেলার ১৫ হাজার ৩৪৯টি বিদ্যালয় দুপুরের খাবার সুবিধা পাচ্ছে।
এই নীতিমালা ছাড়াও মন্ত্রিসভার গতকালের বৈঠকে আরও ছয়টি সিদ্ধান্তে অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এর মধ্যে চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন এবং মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ আইনের খসড়ায় নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এছাড়া আরও দুইটি আইনের খসড়া ও দুইটি কোম্পানি গঠনের প্রস্তাবেও মন্ত্রিসভা অনুমোদন দিয়েছে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট