চট্টগ্রাম বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

এফআর টাওয়ারের অন্যতম মালিক তাসভীর উল আলম গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক

১৮ আগস্ট, ২০১৯ | ৫:৩৫ অপরাহ্ণ

নকশা জালিয়াতির মামলায় অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত বনানীর এফআর টাওয়ারের অন্যতম মালিক তাসভীর উল ইসলামকে গ্রেপ্তার করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ রবিবার বিকাল পৌনে ৪টার দিকে কমিশনের উপ-পরিচালক মো. আবু বকর সিদ্দিকেরর নেতৃত্বে দুদকের একটি দল রাজধানীর সেগুনবাগিচা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে কমিশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রণব কুমার ভট্টাচার্য্য জানান। তাসভীরের কোম্পানি কাসেম ড্রাইসেল ওই ভবনের ২১, ২২ ও ২৩ তলার মালিক। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় পুলিশের করা মামলায় এর আগে গ্রেপ্তার হলেও ওই মামলায় জামিনে আছেন তিনি।

নকশা জালিয়াতির মাধ্যমে ভবনটিতে কয়েকটি তলা বাড়ানোর অভিযোগে গত ২৫ জুন তাসভীরসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে দুটি মামলা করেছিলেন দুদক কর্মকর্তা মো. আবুবকর সিদ্দিক। দুদকের করা এক মামলায় রাজউকের ভুয়া ছাড়পত্রের মাধ্যমে এফআর টাওয়ারকে ১৯ তলা থেকে বাড়িয়ে ২৩ তলা করা, উপরের ফ্লোরগুলো বন্ধক দেওয়া ও বিক্রি করার অভিযোগে ২০ জনকে আসামি করা হয়। এ মামলার আসামির তালিকায় তাসভীর ছাড়াও এফআর টাওয়ারের মালিক এস এম এইচ আই ফারুক, রূপায়ন গ্রুপের চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী খান মুকুল, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান কে এ এম হারুন, সাবেক সদস্য মো. রেজাউল করিম তরফদার, সাবেক পরিচালক মো. শামসুল আলম, বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক মো. মোফাজ্জল হোসেন, সহকারী পরিচালক শাহ মো. সদরুল আলম, সাবেক প্রধান ইমারত পরিদর্শক মো. মাহবুব হোসেন সরকার, সাবেক ইমারত পরিদর্শক মো. আওরঙ্গজেব সিদ্দিকি, সহকারী অথোরাইজড অফিসার মো. নজরুল ইসলাম, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক জাহানারা বেগম, সহকারী পরিচালক মেহেদউজ্জামান, নিন্মমান সহকারী মুহাম্মদ মজিবুর রহমান মোল্লা ও অফিস সহকারী মো. এনামুল হক। এছাড়াও বিসিএসআইআরের সদস্য (অর্থ) মুহাম্মদ শওকত আলী, জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিব আ ই ম গোলাম কিবরিয়া, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব আবদুল্লাহ আল বাকি, গণপূর্ত অধিদপ্তরের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী সৈয়দ নাজমুল হুদা ও নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সামছুর রহমানও এ মামলার আসামি।

দুদকের অন্য মামলাটি করা হয়েছে এফআর টাওয়ারের ১৫ তলা পর্যন্ত নির্মাণের ক্ষেত্রে ইমারত বিধিমালা লঙ্ঘন ও নকশা জালিয়াতির মাধ্যমে ১৮ তলা পর্যন্ত বাড়ানোর অভিযোগে। কুড়িগ্রাম জেলা বিএনপির সভাপতি তাসভীরের বিরুদ্ধে মামলায় অভিযোগ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান জিএসপি ফাইনান্স লিমিটেড (বাংলাদেশ) থেকে পাঁচ কোটি ৬৫ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে অবৈধভাবে এফ আর টাওয়ারের ২১, ২২ ও ২৩ কিনেন।

প্রসঙ্গত, গত ২৮ মার্চ এফআর টাওয়ারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ২৭ নিহত হওয়ার পর এই ভবন নির্মাণে নানা অনিয়মের বিষয়গুলো বেরিয়ে আসতে থাকে। কামাল আতাতুর্ক এভিনিউয়ে ওই ভবনের জমির মূল মালিক প্রকৌশলী এস এম এইচ আই ফারুক। অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে ভবনটি নির্মাণ করে রূপায়ন হাউজিং এস্টেট লিমিটেড। সে কারণে সংক্ষেপে ভবনের নাম হয় এফআর (ফারুক-রূপায়ন) টাওয়ার।

অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পর সরকারের বিভিন্ন সংস্থা চারটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। এর মধ্যে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটি নকশা অনুমোদনে বিধি লঙ্ঘন ও নির্মাণের ক্ষেত্রে ত্রুটি-বিচ্যুতির জন্য রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যানসহ অর্ধশতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারীকে চিহ্নিত করে প্রতিবেদন দেয়া হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, বিধি লঙ্ঘন করে এফ আর টাওয়ারের ১৮ তলার নকশা অনুমোদন করা হয়েছিল। তার ওপরে আরও পাঁচটি ফ্লোর নির্মাণের নকশাকে বৈধতা দিতে বিভিন্ন পর্যায়ে দুর্নীতি হয়। ভবনটি নির্মাণের ক্ষেত্রেও ত্রুটি ও নিয়মের ব্যত্যয় ছিল।

পূর্বকোণ/রাশেদ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট