চট্টগ্রাম মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

২৭ বছর পর নির্বাচিত নেতৃত্বের পথে ছাত্রদল

নিজস্ব প্রতিবেদক , ঢাকা অফিস

১৭ আগস্ট, ২০১৯ | ২:০২ পূর্বাহ্ণ

দুই যুগের বেশি সময় পর নির্বাচনের মাধ্যমে কমিটি গঠন করতে যাচ্ছে বিএনপির ছাত্র সংগঠন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর সম্মেলনের মাধ্যমে এ কমিটি গঠন করার কথা রয়েছে। ১৯৯২ সালের পর আর কোনো কমিটিতেই সরাসরি ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পায়নি। এর পর কেটে গেছে ২৭ বছর। সবশেষ ১৯৯২ সালে ছাত্রদলের পঞ্চম কাউন্সিলে সরাসরি ভোটে বিএনপির বর্তমান জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ও গুম হওয়া সাংগঠনিক সম্পাদক এম ইলিয়াস আলী সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। সম্ভাব্য সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থীরা ইতিমধ্যেই সারাদেশের নেতাকর্মীদের সাথে যোগাযোগ শুরু করে দিয়েছেন। অনেকে

জেলায় জেলায় গিয়ে নেতাদের সাথে কুশল বিনিময়ও করছেন। ছাত্রদলের নেতাদের পাশাপাশি বিএনপির প্রভাবশালী নেতাদের সাথে ও যোগাযোগ করে দোয়া চেয়ে বেড়াচ্ছেন।
এরই মাঝে ছাত্রদলের নেতৃত্ব নির্বাচনের জন্য কাউন্সিল করতে পুনঃতফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন পরিচালনা কমিটি। নতুন ঘোষণা অনুযায়ী, আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত ছাত্রদলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে ভোট গ্রহণ হবে। ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কাউন্সিলের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক খায়রুল কবির খোকন স্বাক্ষর করা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে গত মঙ্গলবার এ কথা জানানো হয়।
এর আগে নতুন নেতৃত্ব বেছে নিতে ১৫ জুলাই ভোটের তারিখ ঠিক করা হয়েছিল। ২০০০ সালের আগে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছেন এমন কেউ ছাত্রদলের কাউন্সিলে প্রার্থী হতে পারবেন না। কিন্তু বয়সসীমা নিয়ে সংগঠনের একটি অংশের আন্দোলনে কাউন্সিল পিছিয়ে যায়। এ ঘটনায় আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত ছাত্রদলের বিলুপ্ত কমিটির ১২ নেতাকে বহিষ্কার করা হয়। সম্প্রতি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বিক্ষুব্ধ নেতাদের সঙ্গে স্কাইপের মাধ্যমে মতবিনিময় করে পরিস্থিতি শান্ত করেন।
পুনঃতফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র বিতরণ ১৭-১৮ আগস্ট, জমা ১৯-২০ আগস্ট। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ৩১ আগস্ট। ২২-২৬ আগস্ট যাচাই-বাছাই শেষে ২ সেপ্টেম্বর চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ। ১২ সেপ্টেম্বর মধ্যরাত পর্যন্ত প্রার্থীরা ভোটের জন্য প্রচার চালাতে পারবেন।
এ নির্বাচন পরিচালনার জন্য ছাত্রদলের সাবেক নেতা খায়রুল কবির খোকনের নেতৃত্বে সাত সদস্যের নির্বাচন পরিচালনা কমিটি, ফজলুল হক মিলনের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের বাছাই কমিটি এবং শামসুজ্জামান দুদুর নেতৃত্বে তিন সদস্যের আপিল কমিটি গঠন করেছে বিএনপি।
পুনঃতফসিল ঘোষণার পর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশী নেতারা জেলায় জেলায় দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন। মোবাইল ফোনে যোগাযোগ তো আছেই। শুধু ভোটারই নয়, সংশ্লিষ্ট জেলা-মহানগর এলাকার প্রভাবশালী বিএনপি নেতাদের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখছেন তাঁরা।
এবারের সম্মেলনে ছাত্রদলের পদপ্রত্যাশী কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা হয়। তাঁরা বলেন, সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি হলে ছাত্রদলের সাংগঠনিক গতি বাড়বে, তেমনি জেলা ও তৃণমূল নেতাদের মূল্যায়ন বাড়বে। শুধু তাই নয়, নিয়মিত সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি হলে নতুন নতুন যোগ্য ও মাঠের নেতৃত্ব বেরিয়ে আসবে। ছাত্রদল ফিরে পাবে তার পুরোনো ঐতিহ্য।
১৯৮০ সালে ছাত্রদলের প্রথম কাউন্সিলে এনামুল কবির শহীদ সভাপতি ও গোলাম হোসেন সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৮১ সালে দ্বিতীয় কাউন্সিলে গোলাম সারোয়ার মিলন সভাপতি ও আবুল কাশেম চৌধুরী সাধারণ সম্পাদক, ১৯৮৩ সালে আবুল কাশেম চৌধুরী সভাপতি ও জালাল আহমেদ সাধারণ সম্পাদক, ১৯৮৬ সালে জালাল আহমেদ সভাপতি ও মাহবুবুল হক বাবলু সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। এরপর সবশেষ নির্বাচন হয় ১৯৯২ সালে। তখন ভোটের মাধ্যমে সভাপতি হন রুহুল কবির রিজভী আর সাধারণ সম্পাদক হন এম ইলিয়াস আলী। এরপর আর কোনো কমিটি নির্বাচনের মাধ্যমে হয়নি। সেই হিসাবে এবার ষষ্ঠবারের মতো ভোটের মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচনের সুযোগ পাচ্ছেন ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট