চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

‘যুবরাজ’কে দেখতে উৎসুক জনতার ভিড়

অনলাইন ডেস্ক

১৫ জুন, ২০১৯ | ৮:০০ অপরাহ্ণ

ঝিনাইদহ সদর উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামে প্রায় ৪০ মণ ওজনের যুবরাজ’কে দেখতে উৎসুক জনতার ভিড় লেগেই আছে। প্রতিদিন শত শত মানুষ আসছে ওই বাড়িতে। তার সঙ্গে সেলফি ওঠানোরও হিড়িক চলছে। অনেকে ছবি ফেসবুকে পোস্ট করছেন। দুর্গাপুরের এই যুবরাজ হচ্ছে শাহ আলম মিয়ার একটি ফ্রিজিয়ান জাতের ষাঁড়। এরইমধ্যে পাইকাররা যুবরাজের দাম হেকেছেন ১৮ লাখ টাকা। তবে শাহ আলম বলছেন, যুবরাজকে ২৫ লাখ টাকায় বিক্রির ইচ্ছে আছে তার।

ঝিনাইদহ সদর উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামের বাসিন্দা মো. শাহ আলম মিয়ার পৈত্রিক বাড়ি মাদারিপুর জেলার শিবচর উপজেলায়। প্রায় সাত বছর আগে এক বন্ধুর হাত ধরে এই গ্রামে চলে আসেন। বর্তমানে এখানে স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। স্কুল ও কলেজ জীবন শিবচরে কেটেছে তার। পরে জীবিকার সন্ধানে বিদেশে যান। পাঁচ বছর সিঙ্গাপুরে থাকার পর দেশে ফিরে আসেন। এরপর নিজের ব্যবসা শুরু করেন। ব্যবসার প্রয়োজনে বেশ কয়েকবার বিদেশেও যেতে হয় তাকে। পরে ঝিনাইদহে এসে তিনি গড়ে তোলেন আব্দুল্লাহ এগ্রো এন্ড ডেইরি ফার্ম। প্রায় ৩৮ লাখ টাকা ব্যয় করে বাড়ি এবং বাড়ির সঙ্গে এই ফার্ম গড়েছেন তিনি। তিন বছর হলো এই খামারে গরু লালন-পালন করছেন। এই ফার্মের আয়েই এখন সংসার চলছে শাহ আলম মিয়ার।

তিনি আরও জানান, বর্তমানে তার খামারে ৭টি গরু আছে। সবগুলো গরুর আলাদা আলাদা নাম আছে। তিনি সবাইকে নাম ধরেই ডাকেন। আসন্ন ঈদুল আযহায় তিনি যে তিনটি গরু বিক্রি করতে চান সেগুলোর নাম যুবরাজ, রবি ও সাহেব। বাকি চারটা আগামী বছর বিক্রি করার পরিকল্পনা আছে।

শাহ আলম মিয়া বলেন, গরুগুলো আমার খুব আদরের। তাদের সবকিছুই নিজ হাতে করার চেষ্টা করি। খাবার দেওয়া, ময়লা পরিষ্কার, গোসল দেওয়া সবই নিজে করি। আমাকে সহযোগিতা করার জন্য তিনজন কর্মচারী আছেন। গরুগুলো অনেক বড় হওয়ায় সব কাজ একা করতে পারি না। তাই অন্যদের সহযোগিতা নিতে হয়। তাদের চিকিৎসা, তাপমাত্রা ঠিক রাখাসহ সার্বক্ষণিক সতর্ক থাকতে হয়।’

এই উদ্যোক্তা জানান, তিন বছর আগে যখন এই খামার শুরু করেন, তখন যুবরাজকে কেনার সময় তার বয়স ছিল ছয় মাস। এখন তার বয়স সাড়ে তিন বছর। সব সময় পরিমিত খাবার আর যত্ন করে করে ষাঁড়টিকে এই পর্যায়ে নিয়ে এসেছেন তিনি। শাহ আলম বলেন, যুবরাজকে কিনতে পাইকাররা আগ্রহ দেখাচ্ছেন। এখন পর্যন্ত ১৮ লাখ টাকা পর্যন্ত দাম বলেছেন তারা।  আরেকটু অপেক্ষা করছি। প্রয়োজনে হাঁটে উঠাবো এবং ২৫ লাখ টাকা দাম চাইবো। সেক্ষেত্রে কিছু কম হলেও বিক্রি করে দেবো। যুবরাজের পেছনে এখন পর্যন্ত আমার ৯ থেকে ১০ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। এখন প্রতিদিন যুবরাজের খাবারের জন্য খরচ হচ্ছে প্রায় ২ হাজার টাকা করে।’

ওই গ্রামের বাসিন্দা হাফিজুর রহমান জানান,শাহ আলম মিয়া গরুর সঙ্গে কথা বলেন। তিনি নাম ধরে ডাক দিলেই গরু বুঝতে পারে। মালিক যে নির্দেশ দেন সেটাই সে পালন করে। এই যুবরাজ আমাদের গ্রামকে অনেক এলাকার মানুষের কাছে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছে। দূর-দূরান্ত থেকে লোকজন আসছেন যুবরাজকে দেখতে।’

ঝিনাইদহ শহর থেকে আসা দর্শনার্থী শাহিনুর রহমান টিটো জানান,আমাদের এলাকার অনেকে যুবরাজকে দেখে গিয়ে গল্প করছিলেন। এই গল্প শুনে আমিও এসেছি। গরুটি দেখে গরু মনে হয়নি, মনে হয়েছে এটি একটি হাতি। জীবনেও এমন গরু দেখিনি।’

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. হাফিজুর রহমান জানান, তারা গরুটির ওজন ৩৫ মণের বেশি হবে বলে ধারণা করছেন। ঈদ আসতে এখনও কিছুদিন বাকি আছে। এরই মধ্যে আরও কিছু ওজন বাড়বে বলে মনে করছেন তিনি।

পূর্বকোণ/মিজান

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট