চট্টগ্রাম বুধবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২৪

শেখ হাসিনাকে ভারত সফরে মোদির আমন্ত্রণ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা অফিস

২১ আগস্ট, ২০১৯ | ২:২৯ পূর্বাহ্ণ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভারত সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ঢাকা সফররত ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. সুব্রামানিয়াম জয়শঙ্কর গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাঁর হাতে মোদীর আমন্ত্রণপত্র তুলে দেন। পরে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের জানান, অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রীকে দ্বিপাক্ষিক সফরে ভারতে যাওয়ার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ আমন্ত্রণের জন্য নরেন্দ্র মোদীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। ভারতের নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার পরে গত সোমবার রাতে প্রথম বাংলাদেশ সফরে আসেন এস জয়শঙ্কর। গতকাল মঙ্গলবার ধানম-িতে বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু করেন তিনি। পরে, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে জয়শঙ্করের দ্বিপাক্ষিক বিষয়ে টানা দেড় ঘণ্টা ধরে চলা বৈঠকে আসামের নাগরিক পুঞ্জী বা এনআরসি ও তিস্তা জলবন্টন চুক্তিসহ অমীমাংসিত বিভিন্ন বিষয়ে দুই মন্ত্রীর মধ্যে আলোচনা হয়। জানা গিয়েছে, জয়শঙ্কর বাংলাদেশকে জানিয়েছেন, আসামের নাগরিকত্ব রেজিস্ট্রির পদক্ষেপ ভারতের ‘অভ্যন্তরীণ’ বিষয়।

দ্বিপক্ষীয় বৈঠক শেষে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে জয়শঙ্কর সাংবাদিকদের বলেন, তিস্তা চুক্তি বিষয়ে নরেন্দ্র মোদি যে প্রতিশ্রুতি বাংলাদেশকে দিয়েছিলেন, তাতে এখনও এখনও ভারত। ভারত সরকার এ বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে। এর আগে ভারত সফরকালে শেখ হাসিনাকে নরেন্দ্র মোদি বলেছিলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমলেই তার সঙ্গে তিস্তা চুক্তি হবে। যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও জানান, এ সব বিষয় ছাড়াও যোগাযোগ, জ্বালানি ও বাণিজ্য বৃদ্ধিতে দুই দেশ একসঙ্গে কাজ করবে। এসময় রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসনে ভারতের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলেও জানান ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। জয়শঙ্কর বলেন, ‘আমরা এ বিষয়ে একমত হয়েছি যে, বাস্তুচ্যুত লোকজনের নিরাপদ, দ্রুত ও স্থায়ী প্রত্যাবাসনে এই অঞ্চলের তিন দেশ- বাংলাদেশ, মিয়ানমার ও ভারতের জাতীয় স্বার্থের বিষয়।’
আসামে যে ৪০ লাখ মানুষ নাগরিকত্ব হারানোর ঝুঁকিতে রয়েছে সেটি বাংলাদেশকে প্রভাবিত করবে কি-না একজন সাংবাদিক জানতে চাইলে তিনি বলেন ‘এটা ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এ নিয়ে কথা বলার কিছু নেই।’ এ সময় বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তার সঙ্গে থাকলেও তিনি কোনও মন্তব্য করেননি।

তিস্তার জল বণ্টন নিয়ে দুই দেশের মধ্যে চুক্তি সম্পন্ন হলেও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, দুই দেশের মধ্যকার অভিন্ন ৫৪ নদীর জল বণ্টনের নতুন ফর্মুলা খুঁজছে বাংলাদেশ-ভারত। পারস্পরিক সমঝোতার ভিত্তিতে অভিন্ন নদীর জল বণ্টন সমস্যার সমাধান করা হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। আসামের এনআরসি নিয়ে বাংলাদেশ উদ্বিগ্ন এমন প্রশ্নের জবাবে জয়শঙ্কর বলেন, জাতীয় নাগরিক পুঞ্জী (এনআরসি) ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেন, দুই পক্ষের মধ্যে অত্যন্ত ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। মোমেনের কথায়, “সব বিষয়েই আমরা কম-বেশি মতৈক্যে পৌঁছেছি।”
বাংলাদেশ-ভারত অংশীদারিত্ব বিশ্বের জন্য মডেল

জয়শঙ্কর জানান, বাংলাদেশের সাথে ভারতের অংশীদারিত্ব একত্র হয়ে কাজ করলে প্রতিবেশীরা কী করতে পারে তার একটি উদাহরণ রয়ে গিয়েছে। তিনি বলেন, নরেন্দ্র মোদী সরকার এই অংশীদারিত্ব সত্যই দক্ষিণ এশিয়া এবং বিশ্বের জন্য একটি রোল মডেল। ‘দুই দেশের সম্পর্ক বর্তমানে স্বর্ণযুগে’ দাবি করে জয়শঙ্কর বলেন, অংশীদারিত্ব বাড়ালে ভারত ও বাংলাদেশ পারস্পরিকভাবে লাভবান হবে। বাংলাদেশের উন্নয়নে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে জয়শঙ্কর বলেন, বাংলাদেশের সব ধরনের উন্নয়ন কাজে আমাদের সর্বাত্মক সহায়তা থাকবে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট