চট্টগ্রাম মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

কাশ্মীর ইস্যুতে হঠাৎ সুর নরম ভারতের

ভারতের একতরফা সিদ্ধান্ত বৈধ নয়: নিরাপত্তা পরিষদে চীন

নিজস্ব প্রতিবেদক , ঢাকা অফিস

১৮ আগস্ট, ২০১৯ | ২:৩১ পূর্বাহ্ণ

কাশ্মীর ইস্যুতে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের রুদ্ধদ্বার বৈঠকের মাত্র কয়েক ঘণ্টা পরই অধিকৃত কাশ্মীরে টেলিফোন সংযোগ পুনরায় চালু করার ঘোষণা দিয়েছে ভারত। গতকাল শনিবার ভারতীয় এক সংবাদ মাধ্যম জানায়, ধীরে ধীরে ছন্দে ফিরছে জম্মু-কাশ্মীর। রাজ্যের ওপর থেকে কারফিউ শিথিল করার ফলে সেখানকার বেশ কিছু স্কুল-কলেজ খোলা হয়েছে। উপত্যকার কিছু জায়গায় মোবাইল আর ইন্টারনেট পরিষেবাও শুরু হয়েছে। জানা যায়, মোট ১০০টি টেলিফোন এক্সচেঞ্জের মধ্যে ১৭টি চালু করা হয়েছে। চালু হয়েছে প্রায় ৫০ হাজার ল্যান্ডলাইন। শ্রীনগরের কিছু কিছু এলাকাতেও চালু হয়েছে টেলিফোনের ল্যান্ডলাইন পরিষেবা। সপ্তাহ দু’য়েক আগে ৩৭০ ধারা রদের প্রাকমুহূর্তে নিরাপত্তার কারণে গোটা জম্মু-কাশ্মীরে টেলিফোন ও সব রকমের ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়। কিন্তু হঠাৎ গতকাল শনিবার থেকে বাদগাম, সোনমার্গ ও মধ্য কাশ্মিরের মনিগাম ও উত্তর কাশ্মীরের গুরেজ, তাঙ্গমার্গ, উরি কেরন কারনা, তাঙ্গধারে ল্যান্ডলাইন পরিষেবা চালু হয়েছে। আর শ্রীনগরে ওই পরিষেবা চালু হয়েছে বিমানবন্দর লাগোয়া এলাকা, সিভিল লাইন্স ও ক্যান্টনমেন্ট এলাকায়। আর মোবাইলে ইন্টারনেট পরিষেবা চালু করা হয়েছে জম্মুর পাঁচটি জেলায়। তাদের মধ্যে রয়েছে, জম্মু, রিয়াসি, সাম্বা, কাঠুয়া ও উধমপুর।
এর আগে শুক্রবার রাতে পাকিস্তান ও চীনের আবেদনের প্রেক্ষিতে ভারত অধিকৃত কাশ্মীরের সাম্প্রতিক সঙ্কট নিয়ে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে একটি রুদ্ধদ্বার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

নিরাপত্তা পরিষদের এক কূটনীতিককে উদ্বৃত করে সংবাদসংস্থা জানায়, বৈঠকটি রুদ্ধদ্বার হওয়ার কারণে পাকিস্তান ও ভারত তাতে অংশগ্রহণ করেনি। এই ধরনের বৈঠক সম্প্রচার বা সাংবাদিকদের প্রবেশ করতে দেওয়া হয় না। তবে, এক সংবাদ সম্মেলনে চীন দাবি করে, সংবিধান সংশোধন করে ভারত সীমান্তে শান্তি বজায় রাখার দ্বিপক্ষীয় চুক্তি লঙ্ঘন করেছে। চীনা কূটনীতিক বলেন, এই মুহূর্তে কাশ্মিরের পরিস্থিতি বিপজ্জনক। কাশ্মীরের দীর্ঘদিনের অবস্থা ভারতের সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে পরিবর্তিত হয়ে গেছে। ভারতকে কাশ্মির ইস্যুতে একতরফা সিদ্ধান্ত নেওয়া থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে চীনা কূটনীতিক বলেন, এমন একতরফা সিদ্ধান্ত গ্রহণ বৈধ নয়। বিষয়টি জাতিসংঘের চার্টার অনুসারে সমাধান হওয়া উচিত।
জাতিসংঘে নিযুক্ত পাকিস্তানের স্থায়ী প্রতিনিধি মালিহা লোদি নিরাপত্তা পরিষদে কাশ্মির ইস্যুতে বৈঠক আয়োজনকে স্বাগত জানিয়েছেন এবং বৈঠক আয়োজনে চীনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, আজ কাশ্মিরি মানুষের কথা শোনা হয়েছে। তারা একা না। জম্মু-কাশ্মিরের শান্তিপূর্ণ সমাধানে আমরা প্রস্তুত। এই বৈঠকে প্রমাণিত হয়েছে জম্মু-কাশ্মির ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় নয়। চীনা দূত মানবাধিকার পরিস্থিতির ওপর গুরুত্বারোপ করেছে। এটাই একমাত্র ও শেষ পদক্ষেপ না। স্বাভাবিকভাবে একে নিজেদের কূটনৈতিক বিজয় হিসাবেই দেখছে পাকিস্তান। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মোহাম্মদ কুরেশি বলেছেন, কাশ্মির যে একটি আন্তর্জাতিক ইস্যু, নিরাপত্তা পরিষদের এই বৈঠকই তার প্রমাণ।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট