চট্টগ্রাম শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের প্রচ্ছদে বাংলাদেশি আলোকচিত্রীর ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক

১৭ জুলাই, ২০১৯ | ৭:৪২ অপরাহ্ণ

বাংলাদেশের কক্সবাজার। সেখানে আশ্রয় নেয়া একজন রোহিঙ্গা মা তার সন্তানকে কোলে নিয়ে জল ভেঙে এগোচ্ছেন। শিশুটির চোখেমুখে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের ছায়া। এমন একটি ছবি নিয়ে বিখ্যাত ম্যাগাজিন ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের আগস্ট মাসের সংখ্যার প্রচ্ছদ সাজানো হয়েছে। এটি তুলেছেন বাংলাদেশি আলোকচিত্রী কেএম আসাদ। ম্যাগাজিনটির এবারের বিষয় অভিবাসন সমস্যা।

সুখবরটি জানিয়ে কেএম আসাদ ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘আজ আমার জীবনের সবচেয়ে সেরা দিন। আমার তোলা একটি ছবি ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের প্রচ্ছদ হওয়ায় আমি ধন্য। ২০০৫ সালে ছবির মাধ্যমে গল্প বলতে শুরু করেছিলাম। তখন থেকেই স্বপ্ন দেখতাম, একদিন আমার তোলা ছবি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে জায়গা করে নেবে। এটি পূরণ হওয়ায় আমি অনেক আনন্দিত। আমার সব পরিশ্রমের সুফল পাচ্ছি।’
কেএম আসাদ জানান, ‘এই ছবিটি ২০১৭ সালে তুলেছিলাম। এর সুবাদে ওই বছর ইউনিসেফ ফটো অব দ্য ইয়ারে দ্বিতীয় হয়েছিলাম। দুই মাস আগে ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের একজন সম্পাদক কল দিয়ে জানান আমার তোলা ছবি নিয়ে প্রচ্ছদ করতে চান। তারা একটি ওয়েবসাইটে এটি দেখেছেন। তবে প্রচ্ছদের জন্য তারা তিনটি ছবি রেখেছিলেন তালিকায়। সমস্যা হয়েছিল রোহিঙ্গা মা ও তার সন্তানের অনুমতি লাগবে! এটা ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের নিয়ম। কিন্তু তাদের তো খুঁজে পাওয়া সম্ভব নয়। কারণ সেই সময় সাগরপাড়ি দিয়ে অনেকের মতো এই নারী তার সন্তানকে নিয়ে পালিয়ে আসেন কক্সবাজারে। আর তার মুখও আমি তেমন খেয়াল করিনি।

ন্যাশনাল জিওগ্রাফিককে জানালাম, রণাঙ্গনে যদি কোনো আলোকচিত্রী ছবি তোলেন তাহলে কি তার পক্ষে অনুমতি নেয়া সম্ভব? আমার যুক্তি তাদের মনে ধরে। তাই আর সমস্যা হয়নি।’
ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের অন্যতম পরিচালক আমেরিকান আলোকচিত্রী সারাহ লিনের খুব ভালো লেগেছে কেএম আসাদের ছবিটি। তিনি এটাই প্রচ্ছদ করার পক্ষে ছিলেন। তাই তার কাছ থেকে প্রশংসা পাওয়ার কথাও ফেসবুক স্ট্যাটাসে উল্লেখ করেন কেএম আসাদ। অফুরান সহযোগিতার জন্য ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের সব সদস্যদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন তিনি। বন্ধু আর ফলোয়ারদের ধন্যবাদ দিয়েছেন ক্যামেরার গল্পকথক।
আগামী ২৫ আগস্ট বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় নেয়ার দুই বছর পূর্ণ হবে। এ উপলক্ষে ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের এবারের সংখ্যা রোহিঙ্গা ও অভিবাসন নিয়ে সাজানো হয়েছে। এর মধ্যে ছবির গল্পে বলা হয়েছে, কক্সবাজারে বিশ্বের সবচেয়ে বড় শরণার্থী শিবিরে প্রতিদিন ৬০টি শিশুর জন্ম হচ্ছে। এতে তুর্জয় চৌধুরীর তোলা বেশ কয়েকটি রোহিঙ্গা শিশুর স্থিরচিত্র প্রকাশিত হয়েছে।
মার্কিন অলাভজনক সংগঠন ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক সোসাইটি ১৯৮৮ সাল থেকে ম্যাগাজিন প্রকাশ করে আসছে। বিজ্ঞান, ভূগোল, ইতিহাস ও বিশ্ব সংস্কৃতিকে তুলে ধরা হয় এতে।

 

 

পূর্বকোণ/ময়মী

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট