চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

ডেনিশ পুরুষদের বিয়ে করে ডেনমার্কে পাড়ি জমাচ্ছেন থাই মেয়েরা

অনলাইন ডেস্ক

২৯ মে, ২০১৯ | ৬:৪৮ অপরাহ্ণ

ডেনমার্কের ছোট্ট একটি একটি জেলা থাই, যেখানে প্রায় ১০০০ থাই নারী বসবাস করছে। এটি মূলত বেড়েছে গত দশ বছরে। কারণ সেখানে সোমাই নামে একজন সাবেক যৌনকর্মী আরও অনেক থাই নারীকে ডেনিশ সঙ্গী খুঁজে পেতে সাহায্য করেছেন।
সেক্স ট্যুরিজমের জন্য পরিচিত থাইল্যান্ডের পাতায়া শহরে পঁচিশ বছর আগে ভ্রমণে গিয়েছিলেন ডেনমার্কের নেইলস মলবায়েক। সেখানে তার পরিচয় হয় থাই নারী সোমাই-এর সাথে।
সে সম্পর্কে নেইলস নিজেই বলছেন, ‘২৪ বছর আগে সেসব কিছুই আপনার মাথায় আসবে না, কেবল প্রেম ছাড়া’।এখন একতলা একটি বাসায় তাদের আবাস, সেখানে বসে যখন কথাগুলো বলছিলেন তখন সোমাইয়ের পাশে তার দুই ভাগ্নি, যাদেরকে সে বড় করেছে।তাদের পাশেই বসা তার প্রাক্তন স্বামীর বোন। এবং তার পরেই উত্তর পূর্ব থাইল্যান্ডে তার নিজের গ্রাম থেকে আসা এক বান্ধবী।টেবিলে যিনি খাবার পরিবেশন করছিলেন, তিনি সোমাইয়ের ভাগ্নের সাবেক স্ত্রী যে সম্প্রতি এই শহরে এসেছে।এই টেবিলে বসা সকল নারীকে ডেনিশ পুরুষদের সাথে বিয়ের মাধ্যমে সঙ্গী খুঁজে দিয়েছেন সোমাই। খবরের কাগজে সে থাই নারীদের প্রোফাইল দিয়ে বিজ্ঞাপন প্রকাশ করতো, এরপর তার বাড়িতেই সম্ভাব্য পাত্রদের সাথে তাদের প্রথম সাক্ষাতের ব্যবস্থা করতেন এবং ভিনদেশের মাটি ও ভাষার মাঝে তাদের নতুন জীবন শুরুর জন্য বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে থাকে।৩০ বছর আগে এই প্রত্যন্ত মৎস্য-প্রধান জেলাটিতে সোমাই ছিলেন একমাত্র থাই নাগরিক।এখন সে এলাকাটি জুড়ে প্রায় ১০০০ জন থাই নারী, যাদের বেশিরভাগই বৈবাহিকসূত্রে বাসিন্দা।
ডেনিশ রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদ মাধ্যম ডিআর’র তথ্যমতে, পুরো দেশে মাত্র ১২ হাজার ৬২৫ জন থাই নাগরিক রয়েছেন। আর তাদের মধ্যে ১০ হাজার ৪৯৫ জন নারী। ১০ বছরের বেশি সময় ধরে বহু থাই-ডেনিশ জুটির ওপর নজর রাখার পর দুই পরিচালক সাইন প্লামবিচ এবং জানুস মেটয হার্টবাউন্ড নামে একটি তথ্যচিত্র নির্মাণ করেন।গতবছর টরন্টো ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে সেটির প্রিমিয়ার শো হয়। আমেরিকান এনথ্রোপলজিক্যাল এসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে শ্রেষ্ঠ নৃ-বিজ্ঞানীবিষয়ক ফিচার ফিল্ম হিসেবে এবং ডাবলিন ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে হিউম্যান রাইটস ফিল্ম এওয়ার্ড পায় ছবিটি ।
সোমাই পাতায়ায় কাজ করতে গিয়ে পরিচয় হওয়া হবু বরের কাছ থেকে ১৯৯১ সালে পাওয়া চিঠি দেখান যেখানে লেখা, ‘আমি উপলব্ধি করলাম যে, আবার যদি তোমাকে দেখতে না পাই, আমার হৃদয় ভেঙে চুরমার হয়ে যাবে।তুমি চাইলে আমার সাথে এসে থাকতে পারো এবং ডেনমার্কে জীবন কেমন সেটাও জানতে পারবে’।বর্তমানে ৬৬ বছর বয়সী সোমাই বাস্তব জীবনেও হুবহু যেন তথ্যচিত্রের চরিত্র, এখনো প্রাণবন্ত ও সক্রিয়। নিজের জীবন সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তার বক্তব্য, ‘আমি বিদেশিদের বোঝাতে চাই যে, আমরা এখানে শুধু টাকার জন্যই আসিনি।থাই মেয়েরা এখানে আসে কাজের জন্য এবং আমরা প্রচুর পরিশ্রম করি। এটা ফুল বিছানো কোন পথ নয়’।

শেয়ার করুন