চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

কি করে কমাবেন দেহের বাড়তি ওজন?

অনলাইন ডেস্ক

১৬ আগস্ট, ২০১৯ | ২:০০ অপরাহ্ণ

মেদ বা স্থূলতা এখন সামাজিক সমস্যার চেয়ে স্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবেই বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে।

মেদবহুলতা : অতিরিক্ত ওজন ও স্নেহ পদার্থের আধিক্য সাধারণভাবে মেদবহুলতা মনে করা হয়। এর পরিমাপ হলো বডি-মাস-ইনডেক্স বা সংক্ষেপে বিএমআই। বিএমআই ১৮.৫ থেকে ২২.৯-এর ভেতর থাকাটা বাঞ্ছনীয় বা আদর্শ। যাদের বিএমআই ২৭.৫-এর ওপরে, তারা স্থূল বা মেদবহুল। আবার যাদের বিএমআই ২৩-২৭.৪-এর মধ্যে, তারা অতিরিক্ত ওজনদার বা ওভারওয়েট। অন্যভাবে বলা যায়, উচ্চতা অনুযায়ী আদর্শ ওজন ১০০ শতাংশ ধরা হলে, যাদের ওজন আদর্শ ওজনের ১০১ থেকে ১১৯ শতাংশের মধ্যে, তাদের রয়েছে ‘অতিরিক্ত ওজন’ এবং যাদের ১২০ শতাংশের ওপরে, তারা স্থূল।

সাধারণত মানবদেহে দু’ধরনের চর্বিজাতীয় পদার্থ জমা হয়। প্রথমত, অতিরিক্ত চর্বি নিতম্ব ও ঊরুদেশে জমা হয়। একে ‘গাইনয়েড ডিস্ট্রিবিউশন’ বলে। এতে শরীরের আকৃতি অনেকটা নাশপাতির মতো হয়। এটি সাধারণত নারীর ক্ষেত্রে ঘটে থাকে। দ্বিতীয়ত, অতিরিক্ত স্নেহ পদার্থ পেটে জমা হয়, যা দেহের আকৃতি করে আপেলের মতো। অর্থাৎ উদরদেশ স্ফীত হয়। এটির নাম ‘এন্ড্রয়েড ডিস্ট্রিবিউশন’। এটি নারী-পুরুষ উভয়ের মধ্যে দেখা যায়। এ ধরনের স্নেহ পদার্থের সঞ্চয় রোগের ঝুঁকি বহন করে।

রোগের কারণ : মেদবহুলতার নানা কারণের মধ্যে প্রথমেই আসে আচরণগত ব্যাপার। সমীক্ষায় দেখা গেছে, মেদবহুল লোকরা চিরাচরিতভাবে (ক্যালরি খরচের তুলনায়) কম খাদ্যগ্রহণের কথা বলে থাকেন। এটি হতে পারে ছোটখাটো দুয়েকটি খাবার, যা ঘন ঘন খাওয়া হয়। অথচ আমল দেয়া হয় না। কিছু হরমোনসংক্রান্ত ব্যক্তি বা এন্ড্রোক্রাইন ডিজিজ। কিছু কিছু ওষুধও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে ওজন বাড়ায়। যেমন-ক্লোরপ্রোমাজিন জাতীয় ওষুধ, এমিট্রিপটিলিন, ভ্যালপ্রোয়েট, কার্বামাজেপিন ইত্যাদি।

গবেষণায় দেখা গেছে, তিনটি বিষয় ভবিষ্যতে ওজন বৃদ্ধির আশঙ্কা বাড়িয়ে তোলে। প্রথমত, বিপাকক্রিয়া কম হওয়া। দ্বিতীয়ত, বেশি শর্করাজাতীয় খাদ্যের বিপাক। তৃতীয়ত, ইনসুলিন হরমোন। মেদবহুলতার সঙ্গে যেসব রোগের ঝুঁকি আছে তা হলো ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, ক্যানসার, স্ট্রোক, পিত্তথলির রোগ, বাত ও চর্মরোগ, হারনিয়া, স্ট্রেস ইনকন্টিন্যান্স, বন্ধ্যত্ব, শ্বাসতন্ত্রের রোগ। চিকিৎসকের পরামর্শে ওজন কমানোর ওষুধ খেলে ফল পাওয়া যায়।

বর্তমানে অরলিস্টেট উপাদানে তৈরি এক ধরনের ওষুধ চর্বি পরিপাক ও শোষণে বাধার সৃষ্টি করে চর্বি রক্তে শোষিত হতে দেয় না। এটির পাশাপাশি এ ওষুধ কোলেস্টেরল, ট্রাইগ্লিসারাইড ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণেও সহায়ক। এ ছাড়াও লাইপোসাকশন ও লাইপোলাইসিস নামক সার্জারিও করা যায়। লাইপোসাকশনে নলের মাধ্যমে চর্বি গলিয়ে দেহের বাইরে আনা হয়। লাইপোলাইসিসে আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্যরে পরিবর্তন ঘটিয়ে (লেজারথেরাপি) দেহের বাড়তি চর্বি কমিয়ে আনা যায়। এ প্রক্রিয়ায় কোনো কাটা-ছেঁড়ার প্রয়োজন হয় না এবং রক্তক্ষরণও হয় না।

পূর্বকোণ/ময়মী

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট