চট্টগ্রাম শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

বৈজ্ঞানিকভাবে মোটা-তাজা করা পশু কী স্বাস্থ্যসম্মত ?

পূর্বকোণ ডেস্ক

২ আগস্ট, ২০১৯ | ২:০৯ পূর্বাহ্ণ

প্রতি বছরই ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে দেশি-বিদেশি গরুর সমারোহে কোরবানির হাটগুলো চাঙ্গা হয়ে ওঠে। সাধারণত কোরবানির পশু হিসেবে মোটাতাজা, নাদুস-নুদুস ও বিশালদেহী গরুগুলোই ক্রেতা সাধারণের নজর কাড়ে। প্রতিযোগিতামূলক বাজারে উচ্চমূল্য হেঁকে চলতে থাকে দরদাম। তাই কাক্সিক্ষত দাম পেতে গরু ব্যবসায়ীরা বিক্রিতব্য গরুকে মোটাতাজাকরণে তৎপর হয়ে উঠে। সঠিক পদ্ধতিতে পশু মোটাতাজাকরণে দোষের কিছু নেই। এ প্রসঙ্গে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের এনিমেল সায়েন্স এন্ড ভেটেরিনারি মেডিসিন অনুষদের ডিন ড. মোফাজ্জল হোসাইন জানান, মোটাতাজাকরণ পদ্ধতি একটি বিজ্ঞানভিত্তিক প্রক্রিয়া। তিন-চার মাসের মধ্যেই নিয়মতান্ত্রিক খাবারের মাধ্যমে পশু মোটাতাজা করা যায়। তিনি জানান, স্বাভাবিকভাবে বেড়ে ওঠা এসব মোটাতাজা গরু স্বাস্থ্যের জন্য মোটেও ক্ষতিকর নয়, বরং সুস্বাদু ও স্বাস্থ্যকর। কিন্তু এমন কিছু অসাধু ও অতি মুনাফালোভী ব্যবসায়ী আছে যারা নিয়মনীতি না মেনেই ব্যস্ত হয়ে পড়ে কৃত্রিম উপায়ে পশু মোটা-তাজাকরণে। এজন্য তারা নিষিদ্ধ ডেক্সামেথাসন, ডেকাসন, বেটামেথাসন ও পেরিঅ্যাকটিন জাতীয় স্টেরয়েড ব্যবহার করেন। ক্ষতিকর এসব ওষুধ প্রয়োগের মাধ্যমে কোরবানির অনুপযোগী অল্পবয়স্ক, অস্বাস্থ্যবান ও চিকন গরুকে অতি দ্রুত

স্বাস্থ্যবান করে তোলা হয়। ফলে এটি শুধু পশুর জন্যই ক্ষতিকর নয়, বরং মানবদেহের জন্যও স্থায়ী ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের মতে, যেকোনো স্টেরয়েড সুস্থ মানুষের শরীরে মারাত্মক ক্ষতি বয়ে আনে। এটা মানুষের কিডনি, লিভার, শ্বাসতন্ত্র, হৃদযন্ত্রসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। বিষয়টি মানবিক ও ধর্মীয় উভয় দৃষ্টিকোণ থেকেই খুবই অন্যায় ও গর্হিত কাজ হিসেবে বিবেচিত। বিশেষজ্ঞদের মতে, বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে ওষুধ দিয়ে মোটাতাজা করলে গরুর স্বাস্থ্য ভালো থাকবে, মাথা উঁচু, শরীর টানটান ও তীক্ষè থাকবে। গরু কেনার সময় ওজনে ভারি, ফোলা ও চর্বি জাতীয় গরু না কেনা ভাল। অন্যদিকে স্টেরয়েড খাওয়ানোর ফলে গরু অসুস্থতার কারণে সব সময় নীরব ও নির্জীব থাকে। ঠিকমতো চলাফেরা করতে পারে না। খাবারও খেতে চায় না। এ সব গরুর পেছনের দিকে উরুর পেশিবহুল জায়গায় আঙ্গুল দিয়ে চাপ দিলে তা উল্লেখযোগ্যভাবে দেবে যাবে। কারণ বাইরে থেকে গোশত মনে হলেও এখানে গোশতের সঙ্গে ব্যাপক পরিমাণে পানি থাকে।
গরুকে যে কোনো ধরনের হরমোন খাওয়ানো হোক না কেন সাতদিন পরে এর কার্যকারিতা থাকে না। এক্ষেত্রে ক্রেতারা ঈদের সাতদিন আগে গরু কিনতে পারেন। অতিমাত্রায় স্টেরয়েড সেবন করা গরু সাতদিন পর বেশিরভাগ মারা যায়।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট