চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

জোরদার করতে হবে ডেঙ্গু প্রতিরোধ ব্যবস্থা

১৭ আগস্ট, ২০১৯ | ১২:৪৫ পূর্বাহ্ণ

ঢাকার পর চট্টগ্রামের মধ্যে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে ডেঙ্গু রোগ। গত ৯ দিনে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগির সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ১৩ গুণ। প্রত্রিকার ভাষ্যনুযায়ী প্রতি ঘণ্টায় গড়ে ২ জন করে এ রোগে আক্রান্ত হয়ে রোগির মৃত্যু হলেও এখনো পর্যন্ত চট্টগ্রামের কোথাও কোনো সংবাদ পাওয়া যায় নি। এসব রোগীরা ক্লিনিক ও বাসায় চিকিৎসা নিচ্ছে। চট্টগ্রাম জেলা ও নগরীর সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৫১ জনে পৌছেছে। এর মধ্যে সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীর হিসাব পত্রিকার মাধ্যমে জানা যায়। দেখা যাচ্ছে চট্টগ্রামের স্বাস্থ্য বিভাগ, সিটি কর্পোরেশন, সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এ রোগ প্রতিরোধে ব্যাপক জন সচেতনতামূলক কার্যক্রম শুরু করেছে। তবে সচেতন মহল এ প্রচারণাকে আশাব্যঞ্জক হিসেবে দেখছে না। সিটি কর্পোরেশনের ৪১টি ওয়ার্ডে ডেঙ্গু রোগের বিনামূল্যে পরীক্ষার কথা বলা হয়েছে। ইতোমধ্যে যেভাবে এ রোগ শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ছে তাতে জনমনে ব্যাপকভাবে ভয়ভীতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
বাস্তবে এ রোগ থেকে জনগণকে রক্ষা করতে হলে ব্যাপকভাবে ঘরে ঘরে পাড়া মহল্লায় পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার কর্মসূচী গ্রহণ করতে হবে। যত্রতত্র ময়লা আবর্জনা স্তূপ করা থেকে জনগণকে সচেতন করতে হবে। নগর ও নগরীর বাইরে এখনো মশা নিধনের কর্মসূচী দেখা যাচ্ছে না। ব্যাপকভাবে শহর গ্রামে মশা নিধনের কর্মসূচী গ্রহণ করতে হবে। এখনো মশা নিধনের বাস্তব কোনো কর্মসূচী শহর গ্রামে শুরু হয় নি। ডেঙ্গু মশা প্রতিরোধ ছাড়া কোনো অবস্থায় এ রোগ থেকে জনগণকে রক্ষা করা সম্ভব হবে না। একদিকে জনগণকে সচেতন করতে হবে, অপরদিকে প্রশাসনকে ডেঙ্গুর বিস্তার প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।
সারা দেশে যেভাবে ডেঙ্গু রোগ ছড়িয়ে পড়ছে তাতে এটা মহামারী পর্যায়ে চলে যাচ্ছে বলে অনেকেই মন্তব্য করছে। ঢাকাতে এ রোগের বিস্তারের সাথে সাথে সারা দেশে শহর গ্রামে রোগটি ছড়িয়ে পড়তে দেখা যাচ্ছে। কোনো অবস্থায় এটাকে হালকাভাবে দেখার কোনো সুযোগ আছে বলে মনে হয় না। প্রধানমন্ত্রী ডেঙ্গু রোগ প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। এ রোগের প্রয়োজনীয় মেডিসিন সংগ্রহ ও রোগীদের মধ্যে বিতরণের ব্যবস্থা করতে হবে। কোনো অবস্থায় ডেঙ্গু রোগ শনাক্ত করতে অতিরিক্ত টাকা নেয়া যাবে না। বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে জাতির এ ক্রান্তিকালে মানবসেবায় ডেঙ্গু রোগীদের পাশে আসা চায়। রোগী যাতায়াতে পরিবহন ব্যবস্থা যানজটমুক্ত রাখা চায়।
সামনে মুসলমানদের দ্বিতীয় ধর্মীয় অনুষ্ঠান ঈদুল আযহা আসছে। এ ঈদে লাখ লাখ পশু কোরবানি হবে। এসব কোরবানি পশুর উচ্ছিষ্ট পরিবেশকে যাতে অসুস্থ্য না করে তাও এখন থেকে সমোচিত কর্মসূচী নিয়ে স্থানীয় প্রশাসনকে এগোতে হবে। কোরবানির উচ্ছিষ্ট সাথে সাথে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন পুঁতে ফেলা এবং ধ্বংস করার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। অন্যথায় এসব উচ্ছিষ্ট ময়লার মাধ্যমে মশার ব্যাপকতা আরো বৃদ্ধি পাবে। পাড়া মহল্লা ও ঘরে ঘরে স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে এখনি এ রোগের প্রতিরোধে কর্মসূচী বাস্তবায়ন জোরদার করতে হবে। তাহলেই সম্ভব হতে পারে আশঙ্কাজনক এ পরিস্থিতির উত্তরণ।

মাহমুদুল হক আনসারী
চট্টগ্রাম

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট