চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

গোল টেবিল বৈঠকে বদিউল আলম মজুমদার

দেশের স্বার্থে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে কার্যকর করতে হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক

২৫ আগস্ট, ২০১৯ | ২:২২ পূর্বাহ্ণ

‘দেশের শাসন ব্যবস্থা ভেঙে যাওয়ার ফলে আমরা তলানির দিকে যাচ্ছি। বর্তমানে দেশে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা বদলের পথ বন্ধ হয়ে গেছে। এই পথ যদি আমরা উন্মুক্ত করে না দিই, তাহলে তলানিতে যাওয়া বন্ধ হবে না। দেশের স্বার্থে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে কার্যকর এবং সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করতে হবে।’ সুজনের (সুশাসনের জন্য নাগরিক) চট্টগ্রাম জেলা কমিটির আয়োজনে ‘বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কার ও নাগরিক ভাবনা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে এসব কথা বলেন সুজনের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার। গতকাল শনিবার চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে এ গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। তিনি আরো বলেন, বর্তমানে দেশের সবচেয়ে বড় ঝুঁকি বা চ্যালেঞ্জ হচ্ছে দায় বদ্ধতা কাঠামো ও শাসন পক্রিয়া ভেঙে পড়া। পাঁচ বছর পর পর যদি আমাদের ভোটারদের কাছে গিয়ে ভোট ভিক্ষা চাইতে হয়, এর চেয়ে বড় দায়বদ্ধতা আর হতে পারে না। অমর্ত্য সেনের একটি উক্তি উল্লেখ করে বদিউল

আলম মজুমদার বলেন, ‘যে দেশে গণতন্ত্র আছে সে দেশে দুর্ভিক্ষ হতে পারে না।’ এর অর্থ হচ্ছে সে দেশে বড় কোন কিছু হয় না। দেশের শাসন প্রক্রিয়া ভেঙে পড়েছে উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, একটি গভানিং সিস্টেমের তিনটি উপাদান থাকে। আইন-কানুন, মূল্যবোধ, আইনের প্রয়োগ। এগুলো যখন কাজ করে তখন সিস্টেম কাজ করে। এগুলো যখন নষ্ট হয়ে যাবে তখন দেশে এক ব্যক্তির শাসন প্রতিষ্ঠা হবে। বর্তমানে আমাদের দেশের আইনের প্রয়োগ এবং দায়বদ্ধতার ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মঈনুল ইসলাম বলেন, নির্বাচন ব্যবস্থাকে নষ্ট করে দেশের রাজনৈতিক সংকট তৈরি করেছে। আমরা যতই নিরপেক্ষ নির্বাচনের কথা বলি, নির্বাচন কমিশন যে নিরপেক্ষভাবে কোন কাজ করতে পারছে না, গত নির্বাচন সেটি প্রমাণ করেছে।

ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটির উপাচার্য প্রফেসর সেকান্দার খান বলেন, বাস্তব সম্মত সুপারিশ মালা তৈরি করার জন্য আজকের এই গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করেছে সুজন। বর্তমানে রাজনীতি পয়সা কামানোর পথ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখন আর সমাজ সেবা বা দেশ প্রেম নিয়ে কেউ রাজনীতিতে আসে না।

এডভোকেট আক্তার কবির চৌধুরীর সঞ্চালনায় গোল টেবিল বৈঠকে আরো বক্তব্য রাখেন, এডভোকেট বদরুল আনোয়ার, ড. মনজুরুল আমিন, অধ্যাপক বিনু কুমার দে, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা বেলায়েত হোসেন।
অংশগ্রহণকারীদের মতামত ও সুপারিশ গ্রহণের সুবিধার্থে সুজন-এর রাজনৈতিক সংস্কার ২০টি প্রস্তাব প্রদান করা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে- রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে পরিবর্তন, নির্বাচনী সংস্কার, কার্যকর জাতীয় সংসদ, স্বাধীন বিচার বিভাগ, নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন, সাংবিধানিক সংস্কার, গণতান্ত্রিক ও স্বচ্ছ রাজনৈতিক দল, স্বাধীন বিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান, দুর্নীতি বিরোধী সর্বাত্মক অভিযান, যথাযথ প্রশাসনিক সংস্কার, বিকেন্দ্রীকরণ ও স্থানীয় সরকার, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, শক্তিশালী নাগরিক সমাজ, মানবাধিকার সংরক্ষণ, একটি নতুন সামাজিক চুক্তি, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা, আর্থিক খাতে সুশাসন প্রতিষ্ঠা, শিক্ষার মানোন্নয়ন, তরুণদের জন্য বিনিয়োগ ও নারীর ক্ষমতায়ন।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট