চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

লামায় দরিদ্র নারীদের ৭৭ লক্ষ টাকা এনজিও’র পকেটে

নিজস্ব সংবাদদাতা , লামা

২১ আগস্ট, ২০১৯ | ২:১২ পূর্বাহ্ণ

বান্দরবানের লামা উপজেলার রূপসীপাড়া ইউনিয়নসহ ৫টি ইউনিয়নের ভিজিডি কার্ডের বিপরীতে জমানো ৭৬ লক্ষ ৮০ হাজার আসল টাকা ফেরত পাচ্ছে না ১৬ শ অসহায় নারী। অভিযোগ উঠেছে পুরো টাকা স্থানীয় জন প্রতিনিধিদের যোগসাজশে আত্মসাতের। তবে রূপসীপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান ছাচিংপ্রু মার্মা বলেছেন, টাকা আমাদের কাছে রয়েছে। উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা ও ইউএনও’র মধ্যে সমন্বয় হলেই টাকা ফেরত দিয়ে দেবো। উপজেলা নির্বাহী অফিসার নুর এ জান্নাত

রুমি বলেন, শুধুমাত্র গজালিয়া এবং ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়ন ব্যতিত বাকি ৫টি ইউনিয়নে এই সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। শীঘ্রই এই বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সূত্রমতে, গত ২০১৭ সাল হতে দুই বছর ধরে প্রতিজন মাসিক দুইশত টাকা হারে সঞ্চয় করে জমিয়েছেন জনপ্রতি চার হাজার আটশত টাকা। গত ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ তারিখে ভিজিডি কার্ডের বিপরীতে অর্থ সঞ্চয়ী কার্যক্রমের সমাপ্ত হয়। এই ভিজিডি কার্ডের মেয়াদ শেষে লাভসহ টাকাগুলো ফেরত দেওয়ার কথা থাকলেও প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার ছয় মাস পার হলেও বার বার ধর্না দিয়েও সঞ্চয়ের টাকা পাচ্ছে না সঞ্চয়ীরা। দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় চেয়ারম্যান, মেম্বারের কাছে প্রতিদিন ধর্না দিয়েও কোন উপায় খুঁজে পাচ্ছে না তারা।

স্থানীয় চেয়ারম্যান টাকাটা ফেরত দিবেন বলে কালক্ষেপণ করায় হতাশ হয়ে পড়েছে রূপসীপাড়া ইউনিয়নের ৩৪০ জন ভিজিডির কার্ডধারী হতদরিদ্র নারী।
জানা গেছে, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের আওতায় ‘প্রগতি’ নামের একটি এনজিও’র মাধ্যমে ২০১৭ সালের ১ জানুয়ারি বান্দরবানের লামা উপজেলায় দুই বছর মেয়াদী ভিজিডি প্রকল্পের কার্যক্রম শুরু হয়। প্রত্যেক হতদরিদ্র নারীকে প্রতিমাসে জনপ্রতি ৩০ কেজি চাউল প্রদানের বিপরীতে পাস বইয়ের মাধ্যমে মাসিক ২০০ টাকা সঞ্চয় জমা নেয়া হয়। গত ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ সনে চলমান ভিজিডি কার্যক্রমের সমাপ্ত হয় এবং মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের স্মারক নং-৩২.০১.০০০০.০০৮.০২.১৬১.১৮.৪৩৬, তারিখ-১৮/১১/২০১৮ইং মূলে ২০১৭-১৮ইং অর্থ বছরের চক্রের ভিজিডির উপকার ভোগীদের সঞ্চয়ের অর্থ (মুনাফাসহ) ১৫ দিনের মধ্যে ফেরত প্রদানের তাগিদ দেয়া হয়।
ইতিমধ্যে লামা উপজেলার গজালিয়া ইউপি ও ফাঁসিয়াখালী ইউপি চেয়ারম্যান ভিজিডি কার্ডের বিপরীতে জমাকৃত উদ্বুদ্ধকরণ সঞ্চয়ী টাকা লাভসহ ফেরত দিয়ে দেন। এদিকে রূপসীপাড়া, লামা সদর, সরই, ফাইতং ও আজিজনগর ইউনিয়নের আরো ১৬০০ জন হতদরিদ্র মহিলা ৭৬ লক্ষ ৮০ হাজার টাকার হদিস পাচ্ছে না বলে অভিযোগ।
রূপসীপাড়া ইউনিয়নের উত্তর দরদরী নয়াপাড়া গ্রামের রুনা আক্তার (৩৫), হাতিয়া পাড়া গ্রামের জরিনা বেগম (৩৭) ও শাহানা বেগম (৩৭) বলেন, প্রত্যেকের ৪ হাজার ৮০০ টাকা করে জমা থাকলেও দিনের পর দিন অফিসে ঘুরেও তারা টাকা পাননি। উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা সাহেলা পারভীন বলেন, এনজিও সংস্থা মাঠ পর্যায় থেকে টাকা উত্তোলন করে যথাসময়ে টাকা জমা না দেওয়ায় এই সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। এই বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট