চট্টগ্রাম মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

বিকেল হলেই সড়কে জিম্মি লাখো মানুষ

নিজস্ব প্রতিবেদক

২১ আগস্ট, ২০১৯ | ১:৫৬ পূর্বাহ্ণ

নগরীর ৪০ নম্বর উত্তর পতেঙ্গা ওয়ার্ডের ব্যস্ততম মোড় কাটগড়। মোড়টির দু’পাশে প্রায় সবসময় সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে থাকে বিভিন্ন গন্তব্যের শত শত লোকালবাস। তবে বিকেল হলেই বাস শূন্য হয়ে পড়ে মোড়টি। গন্তব্যে পৌঁছাতে তাই ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয় যাত্রীদের। মাঝে মধ্যে দুই একটা বাসের দেখা মিললেও এ সুযোগে যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে তারা। প্রতিদিন বিকেল হলেই এ চিত্রের দেখা মিলে কাটগড় মোড়ে। যেখানে বাসের অপেক্ষায় প্রহর গুনতে দেখা যায় যাত্রীদের।
বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে কাটগড় মোড়ে বাসের জন্য অপেক্ষা করতে থাকা গোলামুর রহমান শিমুল নামে এক যাত্রী বলেন, ‘আমি লেখাপড়ার পাশাপাশি টিউশনি করি। আগ্রাবাদে আমার দুই শিক্ষার্থী আছেন, যাদের সপ্তাহে ৪ দিন করে পড়াই। আজ দুই বছর ধরে তাদের পড়াচ্ছি। কিন্তু এক দিনও সময় মত তাদের পড়াতে যেতে পারিনি। প্রতিদিন বিকেল হলেই বাস শূণ্য হয়ে পড়ে কাটগড় মোড়। মাঝে মধ্যে দু একটা বাস পেলেও তারা অতিরিক্ত ভাড়া দাবি করে। কোন উপায় না থাকায় বাধ্য হয়ে বাড়তি ভাড়া দিয়ে বাসে উঠতে হচ্ছে আমাদের। কিন্তু আমার অভিযোগ হচ্ছে, ‘সারাদিন বাসের জন্য এ মোড়ে দাঁড়ানো যায় না কিন্তু বিকাল হলেই কিভাবে হাওয়া হয়ে যায় বাসগুলো?’। মূলত এই এলাকায় দুটি ইপিজেড আছে। যেখানে থাকা কারখানাগুলোর বেশিরভাগই বিকাল হলে ছুটি হয়ে যায়। এসব কারখানার শ্রমিকদের ট্রান্সপোর্টের ব্যবস্থা করতে বিকাল হলেই সব লোকালবাসগুলো ভাড়া নিয়ে নেয় একটি চক্র। যার জন্য বিকাল হলেই দুর্ভোগ পোহাতে হয় লক্ষাধিক যাত্রীদের। কেননা গার্মেন্টসের ভাড়ায় যাওয়া গাড়িগুলো পথে কোন যাত্রী উঠায় না। আমরা এ দুর্ভোগের হাত থেকে রেহাই চাই।’
গোলামুর রহমান শিমুলের দেয়া এ অভিযোগের প্রমাণ মিলে নগরীর ইপিজেড ও কেইপিজেড মোড়ে। বিকাল ৫টার দিকে এই দুই মোড়ে শতাধিক যাত্রী দাঁড়িয়ে থাকলেও কোন বাসকে থামতে দেখা যায়নি। দাঁড়িয়ে থাকা যাত্রীদের সামনেই খালি বাসগুলো ঘুরিয়ে ইপিজেডে প্রবেশ করতে দেখা যায়। এতে করে প্রতিদিন বিকাল হলেই নগরজুড়ে সৃষ্টি হয় বাস সংকটের। দুর্ভোগ পোহায় লক্ষাধিক যাত্রী। অথচ এই মোড়ে দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশদের এ বিষয়ে কোন ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি। শুধু তাই নয়, ট্রাফিক পুলিশদের সামনেই বাড়তি ভাড়া আদায় করতে দেখা গেছে লোকালবাসগুলোকে।
কেইপিজেড মোড়ে কথা হয় ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করা মো. জিয়াউর রহমান নামে এক সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) এর সাথে। তিনি বলেন, ‘একাধিকবার অভিযান চালিয়েও আমরা বাসচালকদের এ নৈরাজ্য থামাতে পারিনি। বাড়তি ভাড়ার লোভে বিকাল হলেই বাসগুলো গার্মেন্টসের জন্য রিজার্ভ ভাড়া নেয়। শেষ গন্তব্যে পর্যন্ত না গিয়ে ভাড়ার লোভে বাস ঘুরিয়ে দেয়া অবৈধ। আমরা আরো কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট