চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

আউটার রিং রোড প্রকল্প

মেয়াদ শেষ, কাজ শেষ হয়নি

চলতি বছরেই যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে : সিডিএ চেয়ারম্যান

নিজস্ব প্রতিবেদক

১৮ আগস্ট, ২০১৯ | ২:৩১ পূর্বাহ্ণ

সিটি আউটার রিং রোড প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলেও কাজ শেষ হয়নি। পতেঙ্গা, ইপিজেড ও দক্ষিণ কাট্টলী অংশে বাঁধের কিছু অংশ ভেঙে পড়েছে। এছাড়া অনেক অংশে ছোট বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে ওই পথে যাতায়াতকারীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। পতেঙ্গা থেকে ফৌজদারহাট পর্যন্ত ১৭ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে সিটি আউটার রিং রোড প্রকল্পের কাজ চলতি বছরের জুন মাসে শেষ হওয়ার কথা। তবে এ মেয়াদ ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে বলে জানান প্রকল্পের উপ-পরিচালক।

দক্ষিণ কাট্টলী, পতেঙ্গা ও কাটগড় অংশে এখনো বেড়িবাঁধের কিছু অংশ কাঁচা থাকায় যান চলাচল করতে পারছে না। সামান্য বৃষ্টিতেই এ অংশগুলো চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে বলে জানান যাত্রীরা। তবে ডিসেম্বরের মধ্যে এসব অংশের কাজ শেষ করে যান চলাচলের জন্য উপযোগী হবে। এছাড়া, বর্তমানে ৮০ শতাংশের মত কাজ শেষ হয়েছে বলে জানান প্রকল্পের সংশ্লিষ্টরা।

গতকাল শনিবার সরেজমিনে দেখা যায়, পতেঙ্গা, ইপিজেড ও দক্ষিণ কাট্টলী এলাকায় বেড়িবাঁধের উপর প্রাইভেট কার, মাইক্রো, সিএনজি ট্যাক্সি, মোটর সাইকেলসহ বেশ কিছু যানবাহন কাদায় আটকে যায়। লালখান বাজার থেকে বিমান বন্দর পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণ কাজ শুরু হওয়ায় বিমানবন্দর ও সি-বিচ গামী যাত্রীদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। এরমধ্যে রিং রোডের কাজ শেষ করে চলাচলের উপোযোগী করা গেলে এসব ভোগান্তি থেকে সাধারণ মানুষ রক্ষা পেত বলে মনে করেন সাধারণ যাত্রীরা।

এ সম্পর্কে জানতে চাইলে উপ-পরিচালক মো. আশরাফ বলেন, ১৭ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে সিটি আউটার রিং রোড এর মধ্যে ১৫ দশমিক ২০ কি.মি মূল ও ২ দশমিক ১৫ কি.মি. সংযোগ সড়ক। এরমধ্যে পতেঙ্গা ও সাগরিকা অংশে ২-৩ কিলোমিটার সড়কের কাজ বাকি রয়েছে। ফলে এখনো সড়কটি যান চলাচলের জন্য উপযুক্ত নয়। ২০১৫ সালের আগস্টে শুরু হওয়া প্রকল্পটি চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে যান চলাচলের জন্য উপযুক্ত করা হবে।
তিনি আরো জানান, জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষা করার জন্য ৩০ ফুট উঁচু উপকূল রক্ষা বাঁধের ওপরে ১০০ ফুট চওড়া রাস্তা নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। এছাড়া, এই বাঁধে ১১ টি স্লুটস গেট ও ৫ হাজার ৫০০ মিটার ওয়েব-প্রটেকশন ওয়াল নির্মাণ করা হয়েছে। তবে ফিনিশিং এর কিছু কাজ বাকি রয়েছে। সেগুলো শীঘ্রই শেষ হবে।

এ সম্পর্কে সিডিএ’র চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষ বলেন, জমি সংক্রান্ত কিছু বিরোধ থাকায় নির্ধারিত মেয়াদে প্রকল্পের কাজ শেষ করা সম্ভব হয়নি। আর বর্তমানে বর্ষার কারণেও কাজ আটকে আছে। বর্ষা শেষ হলেই আবার দ্রুত গতিতে কাজ শুরু হবে এবং চলতি বছরের মধ্যে যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে।

তিনি আরো বলেন, সড়কটি দক্ষিণ কাট্টলী থেকে সংযোগ রোডের মাধ্যমে স্টেডিয়ামের পাশ দিয়ে সাগরিকায় পোর্ট কানেকটিং রোডের সাথে যুক্ত হবে। এছাড়া পতেঙ্গা থেকে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মাণাধীন টানেলের সাথেও যুক্ত হবে।

উল্লেখ্য, জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা) ২০০৫ সাল থেকে পতেঙ্গা হতে ফৌজদারহাট পর্যন্ত বেড়িবাঁধ কাম আউটার রিং রোড নির্মাণের জন্য সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ শুরু করে। ২০০৭ সালে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে চুক্তি করে। শুরুতে এ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৮৬৫ কোটি ২৮ লাখ ৬০ হাজার টাকা। দুই বার সংশোধনের পর বর্তমানে ব্যয় ধরা হয়েছে ২ হাজার ৪২৬ কোটি ১৪ লাখ ৯৫ হাজার টাকা। এর মধ্যে বাংলাদেশ সরকার ১ হাজার ৭২০ কোটি ১১ লাখ ৮০ হাজার ও জাইকার সহায়তা ৭০৬ কোটি টাকা।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট