চট্টগ্রাম মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

হালদায় অবমুক্ত হবে লক্ষাধিক পোনা

নিজস্ব প্রতিবেদক

১৮ আগস্ট, ২০১৯ | ২:১৮ পূর্বাহ্ণ

 

প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীতে অতীতে স্থানীয় হ্যাচারি থেকে ক্রয় করে কার্প জাতীয় মাছ ছাড়া হতো। ফলে এসব মাছ আশানুরূপ ফল পাওয়া যেত না। তবে এবার প্রথমবারের মত হালদা নদীর রেণু প্রক্রিয়া করে হালদায় ফেলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। হাটহাজারী উপজেলা প্রশাসন এ উদ্যোগ গ্রহণ করে।

গত মৌসুমে হালদা নদীর রুই (রুই, কাতলা, মৃগেল ও কালিবাউশ) জাতীয় মাছে এক কেজি রেণু ক্রয় করা হয়। প্রতি কেজি রেনু থেকে প্রায় দুই লাখ পোনা হয়। তবে এর মধ্যে ৬০ শতাংশ রেণু থেকে পোনা হয়। এ হিসাবে বর্তমানে এক কেজি রেণু থেকে এক লাখ পোনা মাছ তৈরি হয়। শীঘ্রই এসব পোনা হালদায় অবমুক্ত করা হবে।

হালদা নদীর পোনা অনেক মানসম্পন্ন। কিন্তু হালদার পোনা দেশের অন্যত্র নিয়ে প্রক্রিয়া করে বাজারজাত করা হলেও এ নদীতে ফেলার কোনো উদ্যোগ খুব একটা ছিল না। এবার প্রথমবারের মত হাটহাজারী উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ‘প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীর কার্প জাতীয় মা মাছের মজুদ বৃদ্ধির লক্ষ্যে মাছের পোনা অবমুক্তকরণ’ শীর্ষক প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয় গত ৩০ এপ্রিল থেকে ৩০ আগস্ট। গত ২৫ মে হালদা নদীতে ডিম ছাড়ে মা মাছ। এরপর স্থানীয়রা সেই ডিম সংগ্রহ করে হ্যাচারি অথবা মাটির তৈরি কুয়ায় স্থানীয় পদ্ধতিতে রেণু উৎপাদন করে। উৎপাদিত এক কেজি রেণু ক্রয় করে গত জুন থেকে গড়দুয়ারা ইউনিয়নের একটি পুকুরে নিবিড় পরিচর্যা করা হয়। ৬ ইঞ্চি বা তার বেশি আকার ধারণ করলে তা হালদা নদীতে অবমুক্ত করা হবে।

হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মাদ রুহুল আমীন বলেন, ‘প্রথমবারের মত উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে হালদা নদীর পোনা হালদায় ফেলার লক্ষ্যে একটি প্রকল্প গ্রহণ করি। ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় পরিচর্যা ও খাবার দিয়ে প্রায় ৬ ইঞ্চি আকার ধারণ করেছে। খুব শীঘ্রই এসব মাছ হালদা নদীতে অবম্ক্তু করা হবে।’

তিনি বলেন, ‘বিশেষজ্ঞদের মতে, হালদা নদীর পোনা যথেষ্ট মানসম্পন্ন। তাই প্রাকৃতিক প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীর পোনা হালদাতে অবমুক্ত করে মা মাছের পরিমাণ বৃদ্ধির উদ্যোগ গ্রহণ করি। হালদা নদীতে উন্নতমানের মা মাছের পরিমাণ বৃদ্ধি পেলে ডিমের পরিমাণও বাড়বে। যা দেশের মৎস্য সম্পদ বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় হালদা রিভার রিচার্স ল্যাবরেটরির সমন্বয়ক প্রফেসর ড. মো.মনজুরুল কিবরীয়া বলেন, উদ্যোগটি প্রশংসনীয়। অতীতে স্থানীয় হ্যাচারি থেকে পোনা নিয়ে ছাড়া হলেও হালদার পোনা হালদাতে ছাড়ার কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। এবার হালদার পোনা হালদায় ছাড়া হলে মাছের পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে।’

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট