চট্টগ্রাম বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

বেড়েছে জিপিএ-৫, কমেছে পাস

এইচএসসির ফল প্রকাশ ১০টি শিক্ষা বোর্ডে দশম স্থানে চট্টগ্রাম

ইমরান বিন সবুর

১৮ জুলাই, ২০১৯ | ১:৫৩ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রামসহ সারাদেশে গতকাল বুধবার উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে। গতবছরের তুলনায় চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে জিপিএ-৫ এর সংখ্যা বাড়লেও কিছুটা কমেছে পাশের হার। এবছর পাশের হার হচ্ছে ৬২.১৯ শতাংশ। যেখানে গতবছর সে হার ছিল ৬২.৭৩ শতাংশ। এছাড়া এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে মোট ২ হাজার ৮৬০ জন শিক্ষার্থী। যেখানে গতবছর জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ হাজার ৬১৩ জন। সারাদেশের ১০টি শিক্ষা বোর্ডের মধ্যে পাসের হারে চট্টগ্রাম এবছর দশম অবস্থানে রয়েছে। গতকাল দুপুরে চট্টগ্রাম মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. মাহবুব হাসান গতকাল সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান। বরাবরের মত পাসের হার ও জিপিএ-৫ এ পিছিয়ে পড়েছে মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থীরা। মোট পাসের হার ৬২.১৯ শতাংশ হলেও মানবিক বিভাগে পাসের হার হচ্ছে ৪৮.৬৫ শতাংশ। যার প্রভাব পড়েছে ব্যবসায় ও বিজ্ঞান বিভাগে। মানবিক বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১২৯ জন শিক্ষার্থী। এরমধ্যে ৫৩ জন ছাত্র এবং ৭৬ জন ছাত্রী। অন্যদিকে ব্যবসায় শিক্ষা শাখায় পাসের হার হচ্ছে ৬৪.৮৮ শতাংশ। এদের মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪৭৩ জন শিক্ষার্থী। যেখানে ৩২০ ছাত্রী এবং ১৫৩ ছাত্র। সে হিসেবে ছাত্রদের তুলনায় ছাত্রীদের জিপিএ-৫ এর সংখ্যা দ্বিগুণের বেশি। এছাড়া, প্রতিবারের ন্যায় পাসের হার ও জিপিএ-৫ এ এগিয়ে রয়েছে বিজ্ঞান বিভাগ। সেখানে পাসের হার হচ্ছে ৮০.০৯ শতাংশ। বিজ্ঞান বিভাগে মোট জিপিএ-৫ পেয়েছে ২ হাজার ২৫৮ জন শিক্ষার্থী। এরমধ্যে ১ হাজার ২৪২ জন ছাত্র এবং ১ হাজার ১৬ জন ছাত্রী।
এবারের ফলাফলে পাসের হারে ছাত্রীরা এগিয়ে রয়েছে। অন্যদিকে জিপিএ-৫ এ এগিয়ে রয়েছে ছাত্ররা। এবছরের পাসের হার হচ্ছে ৬২.১৯ শতাংশ। এরমধ্যে মেয়েদের পাসের হার হচ্ছে ৬৫.১১ এবং ছেলেদের পাসের হার হচ্ছে ৫৯.২১ শতাংশ। সে হিসেবে ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের পাসের ৫.৯ শতাংশ বেশি। এবার মোট জিপিএ-৫ পেয়েছে মোট ২ হাজার ৮৬০ জন শিক্ষার্থী। এরমধ্যে ১ হাজার ৪১২ ছাত্রী এবং ১ হাজার ৪৪৮ ছাত্র। সে হিসেবে ছাত্রীদের তুলনায় ৩৬ জন ছাত্র জিপিএ-৫ বেশি পেয়েছে।
রাঙামাটি এবং বান্দরবান জেলায় পাসের হার সামান্য কমলেও খাগড়াছড়ি জেলায় পাসের হার বেড়েছে ১৩.৪২ শতাংশ। কক্সবাজার জেলার পাশের হার হচ্ছে ৫৪.৩৯। যেখানে গত বছর পাসের হার ছিল ৬১.৬৬ শতাংশ। রাঙামাটি জেলার পাসের হার হচ্ছে ৪৫.৫০ শতাংশ, যেখানে গত বছর পাসের হার ছিল ৪৯.৮৯ শতাংশ। খাগড়াছড়ি জেলায় পাসের হার হচ্ছে ৪৯.৯৩ শতাংশ, যেখানে গত বছর পাসের হার ছিল ৩৬.৫১ শতাংশ। বান্দরবান জেলায় পাসের হার হচ্ছে ৫৯.৭১ শতাংশ, যেখানে গত বছর পাসের হার ছিল ৬২.৩১ শতাংশ।
জিপিএ-৫ এর চিত্র : নগরীতে জিপিএ-৫ পেয়েছে ২ হাজার ৫১৯ শিক্ষার্থী। যেখানে ২০১৮ সালে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ হাজার ৪২০ জন এবং ২০১৭ সালে ১ হাজার ২২৫ জন শিক্ষার্থী। চট্টগ্রাম জেলায় (মহানগর ব্যতিত) গত দুই বছরের তুলনায় জিপিএ-৫ এর সংখ্যা বেড়েছে। এবছর জিপিএ-৫ পেয়েছে ২৪১ জন শিক্ষার্থী। যেখানে গত বছর ১৩৯ জন এবং ২০১৭ সালে ১৩১ জন শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছে। কক্সবাজার জেলায় এবছর জিপিএ-৫ পেয়েছে ৫৬ জন শিক্ষার্থী, যেখানে ২০১৭ ও ২০১৮ সালে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩৮ জন শিক্ষার্থী। রাঙামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি- এ তিনটি জেলায় গত বছরের তুলনায় জিপিএ-৫ এর সংখ্যা বেড়েছে। রাঙামাটি জেলায় ২০১৭ সালে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪ জন এবং ২০১৮ সালে জিপিএ-৫ পেয়েছে মাত্র ১ জন । এবার তা বেড়ে ৮ জন শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছে। বান্দরবানে ধারাবাহিকভাবে জিপিএ-৫ এর সংখ্যা বেড়েছে। ২০১৭ সালে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১০ জন, ২০১৮ সালে পেয়েছে ১১ জন এবং এবছর জিপিএ-৫ পেয়েছে ২১ জন শিক্ষার্থী। গত দুই বছর মাত্র ৪ জন করে জিপিএ-৫ পাওয়া খাগড়াছড়ি জেলায় এবার জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৫ জন শিক্ষার্থী।
সামগ্রিকভাবে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে পাসের হার কমলেও মহানগরীতে পাশের হার গত বছরের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে। যেখানে গত বছর পাসের হার ছিল ৭৪.৬৯ শতাংশ, এবার তা বেড়ে হয়েছে ৭৫.৩২ শতাংশ। তবে মহানগর বাদে চট্টগ্রাম জেলার পাসের হার গত বছরের তুলনায় কমেছে। গতবছর যেখানে পাসের হার ছিল ৫৯.২৫ শতাংশ, এবার তা আরো কমে হয়েছে ৫৫.৬১ শতাংশ।
পরীক্ষার ফল সম্পর্কে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. মাহবুব হাসান বলেন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) এবং ইংরেজি বিষয়ে ফল খারাপ হওয়ায় মোট ফলাফলে প্রভাব পড়েছে। মানবিক বিভাগ থেকে আইসিটি বিষয়ে পাসের হার হচ্ছে ৭৪.২০ শতাংশ। ব্যবসায় শিক্ষা বিষয়ে একই বিষয়ে পাসের হার হচ্ছে ৮৩.৫৪ শতাংশ এবং বিজ্ঞান বিষয়ে পাসের হার হচ্ছে ৯৬.৪৬ শতাংশ।
তিনি আরো বলেন, মানবিক বিভাগ থেকে ইংরেজি বিষয়ে পাস করেছে ৬৬.৩৭ শতাংশ। ব্যবসায় শিক্ষা শাখা থেকে পাস করেছে ৮০.৯১ শতাংশ এবং বিজ্ঞান বিভাগ থেকে পাস করেছে ৯৭.০৭ শতাংশ।
মহানগর বাদে চট্টগ্রামের উপজেলা এবং পার্বত্য জেলায় পাসের হার কম হওয়ায় মোট পাসের হারে এর প্রভাব পড়েছে বলে জানান শিক্ষা বোর্ডের এই কর্মকর্তা।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট