চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

লাইনম্যান রশিদকে মামলাভুক্ত না করায় ক্ষোভ

মাতারবাড়িতে তরুণী গণধর্ষণের মামলার আসামিরা আত্মগোপনে

নিজস্ব সংবাদদাতা, মহেশখালী

১৬ জুলাই, ২০১৯ | ১:১৮ পূর্বাহ্ণ

বখাটের হাতে মহেশখালী উপজেলার কালারমারছড়া চালিয়াতলী পাহাড়ে এক তরুণীর গণধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্তদের হন্যে হয়ে খুঁজছে পুলিশ। ১৪ জুলাই বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালানো হয়েছে।
গত শুক্রবার মামলার বাদি ধর্ষিতা যুবতী নিজেই ধর্ষণের মামলা দায়ের করেন। এরপর থেকে মহেশখালী থানা পুলিশ অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে তৎপর হয়ে উঠেছে। জানা গেছে, উপজেলার কালারমারছড়া ইউনিয়নের চালিয়াতলীতে সংঘটিত তরুণী গণধর্ষণের ঘটনা ধামাচাপার চেষ্টার অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছেন এলাকার মেম্বার লিয়াকত আলী, মহিলা মেম্বার খদিজা বেগমসহ মনু মিয়া ও বাঘা নামে এক ধর্ষক। এরা গ্রেপ্তার হওয়ার পর পুলিশের গ্রেপ্তার এড়াতে আত্মগোপনে চলে গেছে অন্যান্য আসামিরা। মেম্বার দু’জনই মামলার এজাহারনামীয় আসামি হয়েছেন। কিন্তু ধামাচাপা চেষ্টার মূল হোতা মাতারবাড়ি সড়কের লাইনম্যান রশিদ এখনো গ্রেপ্তার হয়নি। এমনকি মামলার আসামিও হয়নি। এ নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠেছে। নানা প্রতিক্রিয়া চলছে সর্বত্র। বিভিন্ন সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে, চাঞ্চল্যকর এই গণধর্ষণের ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে মূল ভূমিকায় নেমেছিল লাইনম্যান রশিদ। তিনি ধর্ষকদের পক্ষ হয়ে ধামাচাপার মিশন নিয়ে নেমেছিলেন। গ্রেপ্তার হওয়া মেম্বার লিয়াকত আলীও বিষয়টি এই প্রতিবেদকের কাছে স্বীকার করেছিলেন। তিনি জানিয়ে ছিলেন, ধর্ষকদের বাঁচাতে দৌড়ঝাঁপ করেছিল লাইনম্যান রশিদ। তথ্য মতে, ধর্ষকরা অধিকাংশই সিএনজিচালিত ট্যাক্সিচালক। আর রশিদ হচ্ছে তাদের লাইনম্যান। অন্যদিকে রশিদের বাড়ি মাতারবাড়ি। সেইসূত্রে ধর্ষিতার কথিত মা শামীমার পূর্ব পরিচিত ছিলো এই রশিদ। সে কারণে ধর্ষকরা ঘটনাটি মীমাংসার জন্য রশিদের শরণাপন্ন হয়েছিল। সেইসাথে ছিলো মোটা অংকের টাকার লেনদেন। সব মিলিয়ে রশিদ ঘটনাটি মীমাংসার জন্য ধর্ষণের শিকার মেয়েটির কথিত মা মাতারবাড়ির মেম্বার শামীমা, চালিয়াতলীর মেম্বার লিয়াকত আলী এবং খদিজা বেগমের শরণাপন্ন হন। রশিদ মীমাংসার জন্য নানা কৌশলে সবাইকে বশেও এনেছিলেন। রশিদের মাধ্যমে ম্যানেজ হয়ে মেম্বার লিয়াকত আলী ও মহিলার মেম্বার খতিজা বেগম ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে চেষ্টা শুরু করেন। সে মোতাবেক মেম্বার লিয়াকত আলীর অফিসে দুই দফা বিচার বৈঠক হয়। বৈঠকে জরিমানার অংক নিয়ে মীমাংসা চূড়ান্ত হয়নি। তবে এর মধ্যে শুক্রবার গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচার হলে ভেস্তে যায় তাদের ধামাচাপার মিশন। তবে জনমনে প্রশ্ন, ধর্ষকদের পক্ষ হয়ে মধ্যস্থতাকারী ও ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার মূল হোতা রশিদকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে ছেড়ে দিল কেন? এ নিয়ে সোচ্চার সামাজিক মাধ্যম ফেসবুক। রশিদের সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি স্পষ্ট থাকায় তাকে গ্রেপ্তারের দাবি উঠেছে সর্বমহলে।
তথ্য মতে, গত ৭ জুলাই রাতে ওই তরুণী চট্টগ্রামের কর্মস্থল থেকে নানার বাড়ি মাতারবাড়ি আসার পথে তাকে পাহাড়ে তুলে ধর্ষণ করে নলবিলার আমির সালাম, এনিয়া, সিএনজিচালিত ট্যাক্সিচালক আদালত খাঁ ও ওসমান গণিসহ ১৪ জন। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে বিকালে মাতারবাড়ি থেকে ধর্ষিতাকে উদ্ধার করে। এদিকে মহেশখালী থানা পুলিশ ১৪ জুলাই ধর্ষিতা তরুণীকে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে ডাক্তারি পরীক্ষার পর আবার দ্বীপের থানায় নিয়ে গেছেন। তরুণীর সঙ্গে রয়েছেন মহেশখালী দ্বীপের মাতারবাড়ি ইউনিয়নের শামীমা বেগম নামের এক ইউপি মেম্বার।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট