জনপ্রিয় একটি প্রবাদ ‘আমার বধুয়া আন বাড়ি যায় আমার আঙ্গিনা দিয়া’। এ প্রবাদটি শতভাগ সত্যি হয়েছে উত্তর চান্দগাঁও বেপারিপাড়া ও চৌধুরী বাড়িসহ আশপাশের আনুমানিক ১০ হাজার বাসিন্দার ক্ষেত্রে। চট্টগ্রাম ওয়াসার শেখ রাসেল (মদুনাঘাট) পানি সরবরাহ এবং মোহরা পানি শোধনাগার প্রকল্প দুটি থেকে দৈনিক পানি উৎপাদন হয় ১৮ কোটি লিটার। এ দুটি প্রকল্পের পাইপলাইন দিয়ে উত্তর চান্দগাঁও’র বুকচিরে শহরের নানা প্রান্তে পানি সরবরাহ করা হয়। তাদের জায়গার উপর দিয়ে চলে গেছে ওয়াসার বড় বড় পানির পাইপলাইন। কিন্তু তাদের ভাগ্যে জুটে না পানি।
কাপ্তাই রাস্তা মাথার সন্নিকটে আরাকান সড়কের বাহির সিগনাল এলাকা দিয়ে যাতায়াত এই এলাকার বাসিন্দাদের। বাহির সিগনাল থেকে আনুমানিক কয়েকশ’ ফুট গেলে বেপারিপাড়া ও চৌধুরী বাড়ির অবস্থান। এলাকায় রয়েছে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ শিল্প-কারখানাও। ওয়াসার তথ্যমতে, উক্ত প্রকল্পের পাইপ লাইন থেকে তাদের এলাকায় পানি সরবরাহ হয় না। ওয়াসার গভীর নলকূপ থেকে দেয়া হয় পানি। বাস্তবে তারা পানি পায় না। এ অবস্থা শুধু দু’একদিনের নয়। বছরের পর বছরের। এরইমধ্যে বিষয়টি নিয়ে দৈনিক পূর্বকোণে দুটি প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়েছে। ওয়াসার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ এলাকা পরিদর্শন করে পানি না পাওয়ার কারণ অনুসন্ধান করার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু অবস্থার কোন পরিবর্তন হয়নি। গ্রামে অনেক জলাধার থাকায় মানুষের কোন অসুবিধা হয় না। কিন্তু শহরে পানি ছাড়া এক মুহূর্ত জীবনধারণ অসাধ্য।
পানি ছাড়া এলাকার বাসিন্দাদের কি দুর্বিষহ জীবন- যাপন করতে হচ্ছে তা বর্ণনাতীত। একটি উন্নয়নশীল নগরীর একাংশের নাগরিকগণ মাসের পর মাস পানি না পেয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন, এটা কোনভাবেই কাম্য হতে পারে না। এলাকায় পানি সরবরাহ নিশ্চিত করার দায়িত্ব চট্টগ্রাম ওয়াসার। নাগরিককে কিভাবে- কোথা থেকে পানি সরবরাহ দেয়া যায়, ওয়াসাকেই সেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। স্বল্প মেয়াদি পরিকল্পনার মাধ্যমে দ্রুততম সময়ের মধ্যে পানির সংকট নিরসন করতে হবে। ভাউচারে করে পানি সরবরাহের বিকল্প ভাবা যেতে পারে। অথবা অন্যকোন ব্যবস্থা থাকলে তা-ও করা যেতে পারে। এক কথায়- চান্দগাঁও বেপারিপাড়া ও চৌধুরী বাড়িসহ আশপাশের মানুষদের পানি পেতেই হবে। এভাবে একটি শহরের নাগরিকগণকে বঞ্চিত করার কোন সুযোগ নাই।