চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

ফুল ফল প্রকৃতি ভরা দৃষ্টিনন্দন

রাউজান সুলতানপুর উচ্চ বিদ্যালয় আলো ছড়াচ্ছে শিক্ষায়

জাহেদুল আলম, রাউজান

১৫ মে, ২০১৯ | ১:২২ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম-রাঙ্গামাটি সড়কের পাশে ফুল, ফল, প্রকৃতিতে অনিদ্য সুন্দর পরিবেশ রাউজান সুলতানপুর উচ্চ বিদ্যালয়। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা এ স্কুলটি শিক্ষার আলো ছড়িয়ে যাচ্ছে এলাকায়। এবার এ স্কুলের প্রধান শিক্ষক জামাল উদ্দিন উপজেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক নির্বাচিত হয়েছে। এ স্কুলের শিক্ষার্থীরা স্কাউট, গার্ল গাইড্সসহ বিভিন্ন জাতীয় ও উপজেলা ভিত্তিক অনুষ্ঠানে নানা পর্যায়ে অবদান রেখে পুরস্কৃত হয়েছে ইতিমধ্যে। পাশাপাশি এ স্কুলের শিক্ষার মানও ক্রমাগত উন্নতির দিকে। প্রকৃতি ও ফুল বাগানকে মন থেকে ভালোবাসেন এ স্কুলের প্রধান শিক্ষক জামাল উদ্দিন। তিনি স্কুলের সৌন্দর্যে বৃদ্ধির জন্য বিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে গড়ে তুলেছেন বিশাল ফুল ও আম্রপালি বাগান। লাগিয়েছেন নানাজাতের গাছের চারা।
সরেজমিনে পরিদর্শনে দেখা যায়, চারপাশে পাকা বাউন্ডারি। তাতে গোলাপী রং। বাউন্ডারির ভেতরে সুবিশাল মাঠের মধ্যে গোলাপ, নয়নতারা, গন্ধরাজ, জবা, গান্ধা, বেলি ফুলের সুবিশাল বাগানের মৌ মৌ ঘ্রাণ শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের যেন মন কাড়ছে প্রতিদিন। দেখা গেছে নিম, বকুল, নারিকেলসহ নানা জাতের শত গাছ। এলাকার এমপি এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীর পরামর্শে স্কুলের মাঠের একাংশ গড়ে তোলা হয়েছে আম্রপালি বাগান। স্কুলে রয়েছে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য নিরাপদ পানি প্ল্যান্ট, আলাদা স্যানিটেশন ব্যবস্থা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ১৯৭৩ সালে সুলতানপর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসেন এ স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। তখন এ স্কুলের বর্তমান প্রধান শিক্ষকসহ ২৫ জন ছাত্র-ছাত্রী ছিল। প্রতিষ্ঠাতার সঙ্গে সহযোগী ছিল মোয়াজ্জেম হোসেন, মরহুম আবিদুর রহমান, কাজী আবুল বশর, জহির আহমদ, ছৈয়দুল হক, মাওলানা মোয়াজ্জেম হোসেন, ইউনুছ মাস্টার ও আমিনুল ইসলাম সেলিম। বর্তমানে এ স্কুলে শিক্ষার্থী সংখ্যা ৫২৭। শিক্ষক ও কর্মচারী রয়েছে ১৭ জন। এবারের এসএসসি পরীক্ষায় এ স্কুল থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩ জন। পাসের হার ৮৮.২৪ শতাংশ। এর আগে ২০১৮ সালে এ স্কুল থেকে জিপিএ-৫ পায় ৬ শিক্ষার্থী। এ স্কুলে রয়েছে বিশাল মাঠ। আছে দুটি ভবন। রয়েছে স্কুলের প্রবেশ পথে দুটি সুদৃশ্যে তোরণ। এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী এমপির সহযোগিতায় স্কুলে ৪ তলাবিশিষ্ট ২ কোটি টাকার বেশি ব্যয়ে একটি বিল্ডিং হচ্ছে।
ইউসিবিএল ব্যাংকের পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম খানের অনুদানে আরো একটি ভবন প্রস্তাবিত হিসেবে রয়েছে। স্থানীয়রা জানান, এ স্কুলের যাত্রাকালীন ছাত্র জামাল উদ্দিন প্রথমে সহকারী শিক্ষক ও ২০১০ সাল থেকে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। এলাকায় তিনি খুব ভালো মানুষ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। তার সুদক্ষ পরিচালনায় বিদ্যালয়টি ক্রমাগত উন্নতির শিখড়ে পৌঁছেছে। তিনি গত প্রায় দুই বছর আগে লক্ষাধিক টাকা ব্যয়ে বিদ্যালয়ের মাঠে বিশাল ‘পুষ্পকানন’ নামের ফুল বাগান গড়ে তোলে বিদ্যালয়কে দৃষ্টিনন্দন করে তোলেন। এ স্কুলে চালু রয়েছে ডা. কামরুজ্জামান ট্রাস্ট স্মৃতি বৃত্তি, নতূন চন্দ্র সিংহ স্মৃতি বৃত্তি, জে.কে ফাউন্ডেশন বৃত্তি ও প্রসন্ন চন্দ্র দাশ স্মৃতি বৃত্তি।
এ স্কুলের বর্তমান পরিচালনা কমিটির সভাপতি আলহাজ নুরুল আমিন, শিক্ষানুরাগী সদস্য জিয়াউল হক রোকন, সাধারণ অভিভাবক সদস্য আবদুল মোমেন শরীফ। তারা বলেন, ‘এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী এমপি সহযোগিতা ও নির্দেশে গত বেশ কয়েক বছরে স্কুলের অনেক উন্নয়ন হয়েছে। এ ধারাবাহিকতায় এ স্কুল আরো অনেক এগিয়ে যাবে।’ স্কুলের প্রধান শিক্ষক জামাল উদ্দিন বলেন স্কুলের স্কাউট, গার্ল গাইড্স, স্কাউটিং গার্ল গাইড্স উপজেলা পর্যায়ে প্রায়ই কৃতিত্ব লাভ করে থাকে। স্কাউটিং গার্ল গাইড্সে এবার বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে ৩য় ও গতবছর প্রথম স্থান লাভ করে। গতবছর উপজেলা ভিত্তিক প্রশ্নোত্তর প্রতিযোগিতায় প্রথম ও ২য় স্থান লাভ করে। তাছাড়া এ স্কুলে প্রত্যেক জাতীয় দিবস, মা সমাবেশসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠান হয়ে থাকে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট