চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

১১ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে ঝুঁকিতে বাংলাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

১০ জুলাই, ২০১৯ | ৬:১১ অপরাহ্ণ

মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে কক্সবাজারে আশ্রয় দিয়েছি। তাদের উপস্থিতি এসব এলাকাকে আরও অনিরাপদ ও ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলেছে। আজ বুধবার (১০ জুলাই) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজধানীর হোটেল ইন্টার কন্টিনেন্টালে গ্লোবাল কমিশন অন এডাপটেশন আয়োজিত প্রধান অতিথির এক অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরো বলেন, আমাদের জনগণের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। গত এক দশকে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক খাতে বিশাল উন্নতি হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রতিকূল প্রভাবে এ অর্জনগুলো আজ হুমকির সম্মুখীন। গত কয়েক বছরে আমরা গ্রিডবিহীন এলাকায় ৫০ লাখের বেশি সৌর প্যানেল স্থাপন করেছি ও ৩৫ লাখের বেশি রান্নার উন্নত চুলা স্থাপন করেছি।



জলবায়ু পরিবর্তন আমাদের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি উল্লেখ করে তিনি বলেন, পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা ইতোমধ্যে প্রাক-শিল্প স্তরের চেয়ে প্রায় এক ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড উপরে পৌঁছেছে। ২০১৫ থেকে ২০১৮ সাল মানব ইতিহাসে সবচেয়ে উষ্ণ বছর ছিল।
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় অর্থপূর্ণ সহযোগিতার জন্য ২০১৫ সালে প্যারিসে বিশ্ব সম্প্রদায় একটি সুদৃঢ় অবস্থান তৈরিতে সফল হয়েছে। প্যারিস চুক্তি হচ্ছে এই বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার সবচেয়ে বাস্তবসম্মত ও কার্যকর বৈশ্বিক চুক্তি। বান কি মুন-এর উদ্যোগে গঠিত পানি বিষয়ক উচ্চ পর্যায়ের রাজনৈতিক ফোরাম (এইচএলপিডাব্লিউ) এর চূড়ান্ত রিপোর্টে আমরা লিখেছি ‘প্রতি ফোঁটা মূল্যবান’।
বিগত কয়েক দশকে বাংলাদেশ ভূ-খণ্ড বেশ কয়েকটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রত্যক্ষ করেছে। শুধু ১৯৭০ সালের ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ে সাত লাখেরও বেশি মানুষের মৃত্যু ঘটে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান উপকূলীয় অঞ্চলে ১৭২টি মুজিব কেল্লা (সাইক্লোন শেল্টার) নির্মাণের মাধ্যমে দুর্যোগ মোকাবিলায় পথ রচনা করেন। জাতির পিতা ১৯৭২ সালে ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবিলায় পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে সাইক্লোন প্রিপেয়ার্ডনেস প্রোগ্রাম (সিপিপি) গ্রহণ করেন। বর্তমানে সেখানে ৪৯ হাজার ৩শ ৬৫ জন প্রশিক্ষিত স্বেচ্ছাসেবক রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা ব্যাপক বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি হাতে নিয়েছি। আগামী ৫ বছরে দেশের ২২ থেকে ২৪ শতাংশ অঞ্চল গাছপালায় আচ্ছাদিত করা হবে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ অত্যন্ত সফলভাবে ৬ লাখ ১ হাজার ৭শ হেক্টর এলাকায় ম্যানগ্রোভ বনের ব্যবস্থাপনা করছে।



গ্লোবাল কমিশন অব এডাপটেশন-এর সহযোগিতায় আমরা জলবায়ুর ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবিলায় সঠিক অভিযোজন কৌশলের পাশাপাশি সাশ্রয়ী পন্থা ও ঝুঁকি নিরসন ব্যবস্থার সুবিধা পেতে চাই।
অভিযোজন প্রক্রিয়ায় অগ্রগামী দেশ হিসেবে বাংলাদেশে একটি আঞ্চলিক অভিযোজন কেন্দ্র স্থাপনের দাবি রাখে।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মার্শাল দ্বীপপুঞ্জের প্রেসিডেন্ট হিলদা সি হেইন, গ্লোবাল কমিশন অন এডাপটেশনের চেয়ারম্যান ও জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি মুন এবং বিশ্ব ব্যাংকের সিইও ক্রিস্টালিনা জর্জিওভা।

পূর্বকোণ/ তাসফিয়া

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট