চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

শিশুর খেলনা বাছাই

ইয়াসমিন আকতার

২১ মে, ২০১৯ | ১:২১ পূর্বাহ্ণ

শিশুদের জন্য খেলনা বাছাই করা বড়দের পক্ষে একটি কঠিন কাজ। আপনার সন্তান কোন খেলনাটি পছন্দ করে তা বুঝতে পারাটাও জটিল। শিশুর বয়স অনুযায়ী খেলনা বাছাই করতে পারলে সবচেয়ে ভালো। আপনার সন্তানের বয়স এক বছর হলে তাকে উজ্জ্বল রঙের খেলনা দিতে পারেন। এই বয়সের শিশুদের কখনই সুতা বা তার জড়ানো খেলনা দেয়া ঠিক নয়। কেননা খেলার সময় অসাবধানতাবশত গলায় জড়িয়ে দুর্ঘটনার আশংকা থাকে।
যখন সন্তানের বয়স দু’এ পা দেবে, তখন রঙিন ও শক্ত ধরনের বই দিতে পারেন। সেই সাথে ফোম বা প্ল্যাস্টিকের তৈরি খেলনা দেয়া যেতে পারে। এছাড়া এই বয়সের শিশুদের মিউজিক জাতীয় খেলনা দেয়া উত্তম। মিউজিক শুনিয়ে তার প্রতিক্রিয়া জানতে পারবেন। সন্তানের বয়স তিনের কোঠায় পৌঁছলে ড্রয়িং খাতা ও বড় পেনসিল দেবেন আঁকাআঁকি করার জন্য। সেই সাথে টেনে নেওয়া যায় এমন খেলনা গাড়িও দিতে পারেন।
শিশুর বয়স যখন চার থেকে পাঁচ হবে, তখন তার খেলার জন্য বিল্ডিং বক্স ও ক্লে মডেলিং কিট জাতীয় খেলনা উত্তম। এতে আপনার সন্তানের সৃজনশীল চিন্তার ইন্ধন জোগাবে, সেই সাথে বোর্ড গেম, পাজল দিলেও তার সময় কাটবে বেশ। সন্তানের বয়স আটে পৌঁছলে তাকে দিতে পারেন ভিডিও গেম, বাইসাইকেলসহ আরো নানা খেলনা।
খেলনা বাছাই:
শিশুদের খেলনা হিসেবে সহজে অগ্নিকা- ঘটাতে পারে এমন খেলনা বাদ দিন। ব্যাটারিচালিত খেলনা পরিহার করুন এখনই। ব্যাটারি চালিত খেলনা থেকে তৈরি হওয়া শব্দ শিশুর কচি মস্তিষ্কে গভীর ও দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলতে পারে। যার ফলে বড় ধরনের ক্ষতি হতে পারে। আবার এমনও হতে পারে শিশু খেলনা ঠিকই পছন্দ করছে; তবে খেলনা থেকে নির্গত শব্দ পছন্দ করছে না। শিশুদের জন্য এমন খেলনা বিশেষভাবে বাছাই করুন যা শিশু ইচ্ছামতো মজা করে খেলতে পারে, যেমন- ভবন নির্মাণ সামগ্রী আদলে বানানো খেলনা, কিচেন সেট বা এ ধরনের কিছু। শিশুর জন্য শিক্ষণীয় খেলনা বাছাই করতে মনোযোগ দিন। মনে রাখতে হবে খেলার সঙ্গে শিশু যে বিষয়টি শেখে তা বহু দিন শিশুর মস্তিষ্ককে পরিচালনা করে। সুতরাং খেলনা বাছাইয়ে দিতে হবে বিশেষ মনোযোগ।
খেলনা বাছাইয়ে ছেলেমেয়ের বিভেদ উপেক্ষা করতে পারেন। বাচ্চা ছেলে যদি বার্বি সেট বা কিচেন সেট নিয়ে খেলে বা বাচ্চা মেয়ে যদি ট্রাক গাড়ি খেলনা নিয়ে মজে থাকে; ক্ষতি কী! শিশুর মনের বিরুদ্ধে কিছু না করাই ভালো। খুব বেশি নড়াচড়া করে এমন খেলনা তাদের দিতে পারেন তাতে বাচ্চার শারীরিক পরিশ্রমের অভ্যাস তৈরি হবে। শিশুদের অতিরিক্ত খেলনা কিনে দেয়া থেকে বিরত থাকুন। বহু খেলনা থাকলে শিশু সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগে, যা তাকে এক রকম বিব্রত করে। সুতরাং এ বিষয়ে সাবধান হওয়া উচিত।
খেলনা শুধু খেলনা নয়:
খেলনা ছাড়া শৈশব কল্পনা করা যায়? কখনোই না। খেলনা আর শৈশব যেন একটি অপরটির সম্পূরক। প্রতিটি শিশুর খেলনা বলতে পাগল। এমন অনেক বাচ্চাকে দেখা যায়, যারা খেলনা ছাড়া ঘুমায় না, খায় না, এমনকি পড়তেও বসে না! তবে অভিভাবকদের উচিত ভেবেচিন্তে শিশুদের খেলনা কিনে দেয়া। মনে রাখতে হবে এমন কোনো খেলনা শিশুর হাতে দেয়া যাবে না, যা তার মধ্যে কোনো ক্ষতিকর মনোভাবের জন্ম দেয়।
বাজারে এখন নানা বয়সী শিশুর জন্য নানা ধরনের খেলনা পাওয়া যায়। ভিন্ন ভিন্ন বাজারে থাকা খেলনা পাওয়া যাবে বাহারি প্যাকেট ভর্তি সেটে। এগুলোর চাহিদাই বাজারে বেশি। বৈচিত্র্যময় খেলনাগুলোর মধ্যে আছে সুপারম্যানের আদলে বানানো খেলনা। আবার যেসব বাচ্চা খেলনা গাড়ি পছন্দ করে তাদের জন্য নানা ধরনের খেলনা গাড়িও পাওয়া যাবে বাজারে, জিপ-হেলিকপ্টার-দোতলা বাসসহ নানা ধরনের খেলনা গাড়ি বাজারে আছে।
ফাইটিংপ্রিয় বাচ্চাদের জন্য রয়েছে ফাইটিং পিস্তলের ব্যাগভর্তি খেলনা। একেবারে শিশুর জন্য রয়েছে শিক্ষণীয় নানা খেলনা; যেমন- এক্স-বক্স, রঙিন বর্ণমালা, কাপড়ের তৈরি ছোট ছোট খেলনা কিংবা বিভিন্ন পশুপাখি ইত্যাদি।
তুলনামূলক কিছুটা বড় শিশুর জন্য রয়েছে দারুণ শিক্ষামূলক কিছু খেলনা। যার মধ্যে ভবন নির্মাণ সামগ্রীর আদলে বানানো বর্ণ পরিচয়ের খেলনা। আবার মেয়ে বাচ্চার জন্য রয়েছে বিশেষ ধরনের খেলনা, যা কেবল মেয়েদের জন্যই তৈরি করা। যেমন- কিচেন সেট, বার্বি সেট, ডলস হাউস এবং মেকিং টয়সহ আরও নানা খেলনা।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট