চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

ইংরেজি ও আইসিটি’র খারাপ ফলে সর্বনি¤েœ চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ড

ইমাম হোসাইন রাজু

১৮ জুলাই, ২০১৯ | ১:৫৩ পূর্বাহ্ণ

২০১৮ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের পাসের হার ছিল ৬২ দশমিক ৭৩ শতাংশ। ২০১৯ সালে এসে পাসের হারে আরো ছন্দপতন ঘটেছে। দেশের অন্য শিক্ষাবোর্ডগুলোতে পাসের হারের তুলনায় এবারের ফলাফলে সর্বনি¤েœ রয়েছে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ড। চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের এবারের পাসের হার ৬২ দশমিক ১৯ শতাংশ যা গতবারের চেয়ে শূন্য দশমিক ৫৪ শতাংশ কমেছে।
ফলাফলের এমন ছন্দপতনের কারণ হিসেবে দুটি বিষয়কে দেখছেন বোর্ডের কর্মকর্তারা। এরমধ্যে ইংরেজি ও আইসিটি বিষয়ে ফলাফল খারাপ করায় সামগ্রিকভাবে মূল ফলাফলে প্রভাব ফেলেছে বলেও জানিয়েছেন বোর্ড কর্মকর্তারা। পাশাপাশি মহানগরের তুলনায় জেলা ও মফস্বল এলাকার ফলাফলকেও দায়ী করেছেন তাঁরা। গতকাল বুধবার দুপুরে ২০১৯ সালের এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণা করার সময়ও ফলাফল কিছুটা খারাপ হওয়ার কথা স্বীকার করেন চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাহবুব হাসান। ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা যায়, বরাবরের মতোই ইংরেজি বিষয়ে ফলাফলের দিক থেকে পিছিয়ে রয়েছে শিক্ষার্থীরা। ২০১৭ সালে ইংরেজি বিষয়ে পাসের হার ছিল ৮৪ দশমিক ১১ শতাংশ। ২০১৮ সালে একই বিষয়ে পাসের হার ছিল ৮০ দশমিক ২১ শতাংশ। যা আগের বছরের চেয়ে ৩ দশমিক ৯ শতাংশ কমেছে। ২০১৯ সালেও ফলাফল খারাপ হয়েছে এ বিষয়ে। এবারের ইংরেজি বিষয়ে পাসের হার মাত্র ৬৮ দশমিক ৫০ শতাংশ। যা গত দুই বছরের চেয়ে ১৫ দশমিক ৬১ শতাংশ। এছাড়া আইসিটি বিষয়ে এসেও একই অবস্থা হয়েছে শিক্ষার্থীদের। তবে ইংরেজির চেয়ে ফলাফল কিছুটা ভালো ছিল। গতবছর আইসিটি বিষয়ে ৮৩ দশমিক ০২ শতাংশ পাসের হার থাকলেও এবারের এসে কমেছে এক দশমিক ৭২ শতাংশ। এবারে এ বিষয়ে পাসের হার ৮১ দশমিক ৩০ শতাংশ। ২০১৬ সালে এ বিষয়ে পাসের হার ছিল ৮২ দশমিক ৭৬ শতাংশ।
এ বছরের ফলাফল বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে বিজ্ঞান বিভাগে পাসের হার আগের চেয়ে সাত শতাংশ বেড়েছে। তবে মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষায় কমেছে তিন শতাংশ করে। সামগ্রিক ফলাফলে বিজ্ঞান বিভাগের মধ্যে মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের পরীক্ষার্থীরা সবচেয়ে বেশি খারাপ ফল করেছে ইংরেজি ও আইসিটি বিষয়ে।
ইংরেজি বিষয়ে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে গত বছর ৯৭ দশমিক ৫৬ শতাংশ পাসের হার থাকলেও এ বছর এ বিষয়ে পাসের হার শূন্য দশমিক ৪৯ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৯৭ দশমিক ০৭। মানবিক বিভাগে ৬৬ দশমিক ৩৭ শতাংশ ছিল পাসের হার। যা গতবারের তুলনায় ৩ দশমিক ৩১ শতাংশ কম। গতবারে এ বিষয়ে ব্যবসায় শিক্ষা থেকে পাসের হার ছিল ৮৪ দশমিক ৫৫ শতাংশ। তবে এবছর ৩ দশমিক ৬৪ কমে দাঁড়িয়েছে ৮০ দশমিক ৯১ শতাংশে।
আইসিটি বিষয়ে বিজ্ঞান বিভাগের পাসের হার ৯৬ দশমিক ৪৬ শতাংশ। যা গতবারের তুলনায় শূন্য দশমিক ২৫ শতাংশ। মানবিক বিভাগে এ বিষয়ে এবার পাসের হার ৭৪ দশমিক ২০ শতাংশ এবং ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের পাসের হার ৮৩. ৫৪ শতাংশ।
চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাহবুব হাসান বলেন, ‘মূলত ইংরেজি ও আইসিটি বিষয়ে ফল খারাপ হওয়ার কারণেই সামগ্রিকভাবে মূল ফলাফলে প্রভাব ফেলেছে। এছাড়া মহানগরের বাইরের প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষার্থীরাই মূলত এ দুই বিষয়ে বেশি খারাপ করেছে। এর জন্য এ বছর ফলাফল কিছুটা খারাপ হয়েছে। এ দুই বিষয়ের কারণে শুধু যে পাসের হারে প্রভাব ফেলেছে তা নয়, জিপিএ-৫ এর ক্ষেত্রেও প্রভাব পড়েছে বলে জানান তিনি। তিনি আরো বলেন, ফলাফল গত বছরের তুলনায় তেমন একটি খারাপ হয়নি, সামান্য কমেছে। তবে কলেজ ও পরীক্ষার্থীর সংখ্যা অনেক বেড়েছে। পরীক্ষার্থীর সংখ্যা হিসেব করলে পাশের হার সমানই হবে। তবে সে তুলনায় গতবারের চেয়ে জিপিএ-৫ বেড়েছে। গতবার এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল ৯৬ হাজার ৮৫৮ জন। এবারে অংশ নিয়েছে ৯৮ হাজার ৯২৬ জন শিক্ষার্থী।
এ দুই বিষয় ছাড়াও এমন ফলাফলের পেছনে মফস্বল এলাকাগুলো দায়ী উল্লেখ করে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক আরও বলেন, ফলাফলে মহানগরের চেয়ে জেলা ও মফস্বলে থাকা কলেজগুলোতে পাসের হারের সংখ্যা কম। মহানগরে পাসের হার ৭৫ দশমিক ৩২ শতাংশ হলেও জেলায় পাসের হার মাত্র ৫৫ দশমিক ৬১। এছাড়া পার্বত্য অঞ্চলের কলেজগুলো অনেকটা পিছিয়ে আছে। যার কারণে এমন ফলাফল হয়েছে বলেও জানান তিনি।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট