চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

রাঙামাটিতে বন্যার্তদের দুর্ভোগ ত্রাণ তৎপরতা চলছে

পূর্বকোণ প্রতিনিধি হ রাঙামাটি অফিস

১৭ জুলাই, ২০১৯ | ১:৫৪ পূর্বাহ্ণ

রাঙামাটিতে কয়েকদিনের টানা বর্ষন বন্ধ হলেও চরম দুর্ভোগে বন্যার্ত লোকজন। দুর্গতদের মধ্যে বিভিন্ন সরকারি সংস্থার ত্রাণ তৎপরতা চলছে। গতকাল মঙ্গলবার বরকলে বন্যার্ত লোকজনকে ত্রাণ দিয়েছে, বিজিবির ছোটহরিণা জোন। এরই মধ্যে বিভিন্ন উপজেলায় ত্রাণ পাঠিয়েছে রাঙামাটি জেলা প্রশাসন ও রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।জেলার বরকলের ছোটহরিণা ১২ বিজিবি জোন জানিয়েছে, ১০-১৬ জুলাই প্রবল বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে কর্ণফুলী নদীর উজানে বরকলের বড়হরিণা ও ভুষণছড়া ইউনিয়নের অধিকাংশ ঘরবাড়ি আকস্মিক বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। ফলে সেখানকার বহু মানুষ পানিবন্দি ও গৃহহারা হয়ে পড়ে। মানবতার ডাকে সাড়া দিয়ে সীমান্ত রক্ষার পাশাপাশি আর্তমানবতায় সেবায় এগিয়ে আসে বিজিবির সদস্যরা। মঙ্গলবার ছোটহরিণা জোন কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল বিজয় দেবাশীষ নারায়ণ পাল সেখানকার ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের দুঃখ-দুর্দশা সরেজমিন দেখেন। এ সময় ক্ষতিগ্রস্ত ৩০০ পরিবারের ১৫০০ দুঃস্থ মানুষের মধ্যে চাল, ডাল, চিনি, বিস্কুট, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট, খাবার স্যালাইন ও বিশুদ্ধ খাবার পানি বিতরণ করেন।
জানা যায়, অতি বর্ষণে উজান থেকে নামা পাহাড়ি ঢলে জেলার বিভিন্ন এলাকায় বন্যা দেখা দেয়। বৃদ্ধি পেয়েছে কাপ্তাই হ্রদের উচ্চতা। এতে সদরসহ জেলার বাঘাইছড়ি, বরকল, লংগদু, জুরাছড়ি, নানিয়ারচর, কাপ্তাই, বিলাইছড়ি উপজেলার বিস্তীর্ণ নিচু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। তলিয়ে গেছে, ওইসব এলাকার হাজার হাজার পরিবারের বাড়িঘর, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, স্থাপনা, রাস্তাঘাট ও বিস্তীর্ণ ফসলি জমি। ফলে পানিবন্দি ও গৃহহারা হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন অসংখ্য পরিবার। বর্তমানে বৃষ্টি পরিস্থিতির উন্নতি হলেও চরম দুর্গতিতে বন্যার্ত লোকজন।
রাঙামাটির অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) এসএম শফি কামাল জানান, ৬ জুলাই হতে অতি বর্ষণের কারণে ভূমিধস ও আকস্মিক বন্যায় রাঙামাটিতে ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। পরিস্থিতি এখন উন্নতির দিকে। জেলায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ২৮ হাজার ৪৫২ জন। অতি বৃষ্টিপাতে জেলার কাপ্তাই, বিলাইছড়ি, নানিয়ারচর, কাউখালী, বাঘাইছড়ি, বরকল, লংগদু, জুরাছড়ি, রাজস্থলীসহ কয়েক উপজেলায় আমন বীজতলা, মৌসুমী শাক-সবজি, ফলফলাদি ও জুম ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দুর্গতদের জন্য আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। দুর্গতদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত রয়েছে। এরই মধ্যে সদরসহ বিভিন্ন উপজেলায় নগদ টাকা, চালসহ শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে।
বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আহসান হাবিব জিতু জানান, তার উপজেলায় আকস্মিক বন্যায় হাজারের অধিক পরিবারের বাড়িঘরসহ বিস্তর ফসলি জমি, রাস্তাঘাট, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান প্লাবিত হয়েছে। দুর্গতদের জন্য আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। তাদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত রয়েছে। বরকল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাজিয়া পারভীন জানান, আকস্মিক বন্যায় তার উপজেলার তিন ইউনিয়নে প্রায় পাঁচশ’ পরিবারের বাড়িঘর পানিতে তলিয়ে গেছে। এছাড়া হাটবাজার, রাস্তাঘাট, ফসলি জমি তলিয়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। দুর্গতদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট