চট্টগ্রাম শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

জলাবদ্ধতা এড়াতে চলছে খালের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ ও খনন

নিজস্ব প্রতিবেদক

১৭ জুলাই, ২০১৯ | ১:৪৭ পূর্বাহ্ণ

নগরীর ৩৯নং দক্ষিণ হালিশহর ওয়ার্ডে জলাবদ্ধতা এড়াতে খালের উপর গড়ে তোলা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযানে নেমেছে স্থানীয় কাউন্সিলর। প্রথম দিন বন্দরটিলা এলাকার শহীদ নুরুজ্জামান খালে অভিযান চালানো হয়। উচ্ছেদ করা হয় খাল দখল করে গড়ে তোলা অর্ধশতাধিক অবৈধ স্থাপনা। চসিকের ৪৫ জন সেবক এবং টেকনিক্যাল টিমের সদস্যরা অবৈধ স্থাপনা অপসারণের পাশাপাশি খাল খনন ও পরিষ্কারের কাজ করেন। এই অভিযান পুরো ওয়ার্ডজুড়ে চলমান থাকবে বলে জানান, স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর জিয়াউল হক সুমন।
তিনি বলেন, ‘বর্ষার মৌসুমে সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় এই ওয়ার্ডের বাসিন্দারা। এ নিয়ে পূর্বকোণে একটি প্রতিবেদনও হয়েছিল। যেখানে লেখা ছিল ‘বর্ষায় ভাসবে ইপিজেডের ৫ লাখ মানুষ’। মূলত এই ওয়ার্ড এলাকায় যে খালগুলো ছিল তা সবগুলোই দখলে ছিল। দখল করে কেউ কেউ এই খালের ওপর গড়ে তুলেছে দোকান ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। যার কারণে, খাল দিয়ে পানি ও ময়লা নিষ্কাশনে ব্যাঘাত ঘটত। তাই প্রতিবছর বর্ষা এলে জলে ডুবতো এই এলাকার বাসিন্দারা। স্থানীয়দের দুর্ভোগের হাত থেকে বাঁচাতে এবার খাল উদ্ধারে নেমেছি। প্রথম দিন বৃহস্পতিবার খাল দখল করে বাউন্ডারি দেয়া রুবি সিমেন্টের একটি ওয়াল ভেঙে দেওয়া হয়। এরপর শনিবার উচ্ছেদ কার্যক্রম চালানো হয় বন্দরটিলা এলাকার শহীদ নুরুজ্জামান খালে। খালটি এমনভাবে দখল করে রাখা হয়েছিল যে, দোকানগুলোর নিচে যে কোন খাল আছে তার বোঝার কোনো উপায় ছিল না। ধারাবাহিকভাবে রবিবারও এ উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনা ও আবর্জনা অপসারণের কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। গতকাল আকমল আলী রোডে এ অভিযান চলমান ছিল। সব মিলিয়ে খালের উপর গড়ে তোলা প্রায় দুই শতাধিক অবৈধ স্থাপনা গুড়িয়ে দেয়া হয়। এছাড়া স্থাপনাগুলো সরানোর পাশাপাশি খালের আবর্জনা পরিষ্কার ও খনন কাজ করা হয়েছে। আশা করছি উচ্ছেদ পুরোপুরিভাবে সম্পন্ন হলে বর্ষায় এই এলাকার বাসিন্দাদের জলে ভাসতে হবে না’।
সিটি কর্পোরেশনের এই উচ্ছেদ কার্যক্রমকে স্বাগত জানালেও খাল থেকে অপসারণ করা আবর্জনা খালের পাশেই রেখে দেয়ার বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয়রা। শহীদ নুরুজ্জামান সড়কের স্থায়ী বাসিন্দা শাকিল আহমেদ নামে এক যুবক পূর্বকোণকে বলেন, ‘খাল দখল করে যে স্থাপনা গড়ে তুলেছে তা উচ্ছেদ করে স্থানীয় কাউন্সিলর খুবই ভালো কাজ করেছেন। এতে করে বর্ষায় জলাবদ্ধতায় ভুগতে হবে না। তবে খাল থেকে যে বর্জ্য তুলে খালের পাশে রেখে দেয়া হয়েছে তা দ্রুত না সরালে বৃষ্টিতে আবার তা খালে পড়ে যাওয়ার আশংকা রয়েছে। এতে করে খাল আবারো ময়লায় ভরে যাবে। তাই খুব দ্রুত ময়লাগুলো অপসারণ করা দরকার। এছাড়া এখন রেলবিটে দাঁড়িয়ে বন্দরটিলার মেইন সড়ক দেখা যায়। যা আগে অবৈধ স্থাপনাগুলোর জন্য দেখা যায়নি’।
স্থানীয়দের এ অভিযোগের বিষয়ে কাউন্সিলর সুমন বলেন, ‘গত কয়েক দিন ধরে বিমান বন্দর সড়কে ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজট লেগে আছে। যার কারণে সিটি কর্পোরেশনের যে ময়লার গাড়িগুলো আছে তা এলাকায় প্রবেশ করতে পারছে না। এছাড়া একসাথে সব জায়গায় উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনা করায় শ্রমিক ও গাড়ি সংকটের কারণে ময়লাগুলো অপসারণ করতে কিছুটা সময় লাগছে। তবে আশা করছি, কিছু দিনের মধ্যেই সব খাল উদ্ধারের পাশাপাশি ময়লাগুলোও নির্দিষ্ট স্থানে সরিয়ে ফেলা হবে। জনগণের সাময়িক এ অসুবিধার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন তিনি’।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট