চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

বন্যার পানি সরে ফুটে উঠছে অবকাঠামোর করুণ চিত্র

জাহেদুল আলম, রাউজান

১৬ জুলাই, ২০১৯ | ১:১৮ পূর্বাহ্ণ

রাউজান
দুই শতাধিক পুকুরের
মাছ ভেসে গিয়ে কোটি
টাকার লোকসানে চাষিরা

রাউজানে উঁচু এলাকায় বন্যার পানি সরে গেলেও নিম্নাঞ্চলের প্রায় সব এলাকা এখনো প্লাবিত হয়ে আছে। ডুবে আছে ওইসব এলাকার অভ্যন্তরীণ সড়কসমূহ।
১৪ জুলাই সন্ধ্যা পর্যন্ত কর্ণফুলী, হালদা নদীর তীরবর্তী এলাকা ছাড়াও উপজেলার প্রায় প্রত্যেকটি নিচু ইউনিয়ন বেশ কয়েক ফুট পানিতে তলিয়ে ছিল। এ কারণে এসব এলাকার মানুষের দুর্ভোগের সীমা ছাড়িয়ে গেছে। তলিয়ে আছে আমনের বীজতলা। এতে কৃষকদের চোখেমুখে দেখা গেছে যেন দুঃস্বপ্নের অভিব্যক্তি। বন্যায় উপজেলার কমপক্ষে দুই শতাধিক পুকুরের মাছ ভেসে গিয়ে কোটি কোটি টাকার লোকসান হয়েছে।
জানা যায়, নোয়াজিষপুরের হালদা নদী তীরবর্তী নদীমপুর ও আশেপাশের এলাকাগুলো, উরকিরচর, বিনাজুরী, পশ্চিম গুজরা, গহিরা, নোয়াপাড়া ইউনিয়ন এবং কর্ণফুলী নদীর তীরবর্তী এলাকা বাগোয়ান, পাহাড়তলী, নোয়াপাড়া ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম প্লাবিত হয়ে আছে। এছাড়াও নিম্নাঞ্চলখ্যাত পূর্ব গুজরা, ৭ নম্বর রাউজান ইউনিয়ন এবং পৌরসভার ১, ২, ৩ নম্বর এলাকাগুলো এখনো পানিতে তলিয়ে আছে। ১৪ জুলাই সন্ধ্যায় সরেজমিনে দেখা গেছে বন্যার পানিতে তলিয়ে আছে উপজেলা অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সড়ক হাফেজ বজলুর রহমান সড়কের বড় মৌলানার মাজার সংলগ্ন এলাকা, রাউজান নোয়াপাড়া সেকশন-২ সড়কের জারুলতলা, আধার মানিক এবং রাউজান নোয়াপাড়া শফিকুল ইসলাম চৌধুরী সড়কের বিভিন্ন অংশ। এছাড়া পূর্ব গুজরা, পশ্চিম গুজরা, নোয়াপাড়া, নোয়াজিষপুর, বিনাজুরী, গহিরা, উরকিরচর ও পৌরসভার ১ থেকে ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কমপক্ষে শতাধিক অভ্যন্তরীণ সড়ক এখনো পানির নিচে তলিয়ে রয়েছে বলে সেসব এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন। এ কারণে সাধারণ মানুষ এখনো প্রয়োজনে নৌকা নিয়ে এবং কয়েকফুট পানি মাড়িয়ে এদিক-সেদিক যাতায়াত করছেন। এ প্রসঙ্গে নোয়াজিষপুর ইউপির চেয়ারম্যান সরোয়ার্দী সিকদার বলেন, ‘বন্যায় আমার এলাকার নদীমপুরসহ বিভিন্ন গ্রামের রাস্তা, ঘরবাড়ি হাঁটু এবং কোমর পানি পর্যন্ত প্লাবিত ছিল। বিশেষ করে সর্ত্তার বেড়িবাঁধ ভেঙে পানি ঢুকে পুরো ইউনিয়ন প্লাবিত হয়ে সড়ক, ব্রিজ, পুকুরের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতির পরিমাণ কয়েক কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে।’ ৭ নম্বর রাউজান ইউপির চেয়ারম্যান বিএম জসিম উদ্দিন হিরু বলেন ‘পাহাড়ি অঞ্চলের পানি নেমে আমার এলাকার হাফেজ বজলুর রহমান সড়ক এবং ইউপির অভ্যন্তরীণ সড়কগুলো ভেঙে অস্তিত্বহীন হয়ে পড়েছে। অনেক সড়কে যানবাহনতো দূরের কথা, হেঁটে যাওয়ারও উপায় নেই।’ এদিকে উপজেলার উঁচু অঞ্চলগুলোর পানি নেমে গেলেও সেসব এলাকার অবকাঠামোর করুণ চিত্র ফুটে উঠেছে। পানির তোড়ে ধসে-ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে ওইসব এলাকার পাকা-কাঁচা সড়ক এবং ব্রিজ। বিশেষ করে উঁচু এলাকা হিসেবে খ্যাত ডাবুয়া, হলদিয়া, চিকদাইর, গহিরা, নোয়াজিষপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন অংশে সড়ক-ব্রিজ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছে।’ এ প্রসঙ্গে হলদিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘গত দুই বছরের ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে না উঠতেই এবার আবারো ভয়াবহ বন্যায় আমার ইউনিয়নের প্রায় প্রত্যেক এলাকার সড়ক ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে। বিশেষ করে এ ইউনিয়নের ওপর দিয়ে প্রবাহমান সর্ত্তা খালের বাঁধ ভেঙে বার বার ক্ষতি হচ্ছে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট