চট্টগ্রাম মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৪

ফেসবুকে পরিচয়, অতঃপর প্রেমের ফাঁদ জঙ্গিদের

১০ জুলাই, ২০১৯ | ২:০৪ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রামের একটি কলেজে বিবিএ অধ্যায়নরত শিক্ষার্থী সাফিয়া আক্তার তানজী। ফেসবুকে একটি গ্রুপের মাধ্যমে পরিচয় হয় বরিশালের বাসিন্দা সহিফুল ওরফে সাইফের সঙ্গে। এরপর পরিচয় রূপ নেয় প্রণয়ে। প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে সাফিয়াকে চট্টগ্রাম থেকে বরিশালে ডেকে পাঠান সাইফ। আসলে বিয়ের প্রলোভনে ডেকে পাঠানোর প্রধান উদ্দেশ্য ছিল জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামে অন্তর্ভুক্তি করা। সোমবার (৮ জুলাই) দিনগত রাতে বরিশালের একটি মাদরাসায় অভিযান চালিয়ে সাফিয়াকে উদ্ধারসহ জান্নাতুল নাঈমা (২২) নামে এক নারী জঙ্গিকে আটক করে র‌্যাব-২। পরে মঙ্গলবার (৯ জুলাই) সকালে তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে

রাজধানীর ডেমরা এলাকা থেকে আফজাল হোসেনকে (২৩) আটক করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে উগ্রবাদী বই ও মোবাইল উদ্ধার করা হয়।-বাংলানিউজ
আটকদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে মঙ্গলবার (৯ জুলাই) বিকেলে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক লে. কর্নেল এমরানুল হাসান। তিনি জানান, গত ২৬ জুন চট্টগ্রাম থেকে বিবিএ শিক্ষার্থী সাফিয়া নিখোঁজ হয়। এ ঘটনার ছায়াতদন্তের ভিত্তিতে সোমবার দিনগত রাতে বরিশালের একটি মাদরাসা থেকে সাফিয়াকে উদ্ধার করা হয়। এসময় আটক করা হয় আনসার আল ইসলামের নারী সদস্য নাঈমাকে।
সাফিয়ার সঙ্গে ফেসবুকে নাঈমাসহ বেশ কয়েকজন মেয়ের সঙ্গে পরিচয় হয়। সেখানে একটি গ্রুপে নাঈমার ফেসবুক বন্ধু বরিশালের সাইফের সঙ্গে পরিচয় হয় তার। নাঈমা ও অন্যান্য কয়েকজনের প্ররোচণায় সাইফের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক হয়।
এরপর সাইফকে বিয়ে করার জন্য গত ২৬ জুন নাঈমার সঙ্গে বরিশালের উদ্দেশ্যে ঘর ছাড়েন সাফিয়া। বরিশালে পৌঁছানোর পর প্রেমিক সাইফ তাকে একটি মাদরাসায় ভর্তি করিয়ে দিয়ে সময়ক্ষেপণ করতে থাকে। মাদরাসায় অবস্থানকালীন বিয়ের প্ররোচণায় তাকে জঙ্গিবাদে প্রলুব্ধ করা হয়।
আটক নাঈমাকে জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে র‌্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, তিনি চট্টগ্রামের একটি মাদরাসার শিক্ষার্থী। ফেসবুকের একটি গ্রুপে বিভিন্ন নারী সদস্যদের মাধ্যমে প্ররোচিত হয়ে আনসার আল ইসলামে যোগ দেন। জঙ্গি সংগঠনটির নারী সদস্য বাড়াতে দাওয়াতি কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিলেন। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজন নারীকে সংগঠনে অর্ন্তভুক্ত করেছেন।
সাইফকে বিয়ে করার জন্য কুরআন হিফজ করার শর্ত সাফিয়ার উপর জুড়ে দেন তিনি। এরপর পূর্বপরিকল্পনা ও সংগঠনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সাফিয়াকে বরিশালে নিয়ে যান। নিজের বোন পরিচয় দিয়ে একটি মাদরাসায় সাফিয়াকে ভর্তিও করিয়ে দেন নাঈমা।
এমরানুল হাসান আরো বলেন, আটক আফজাল হোসেন দীর্ঘদিন ধরে আনসার আল ইসলামের সঙ্গে জড়িত। বর্তমানে রাজধানী ঢাকার কাছেল একটি এলাকার স্থানীয় সংগঠক। সংগঠনের নির্দেশনা অনুসারে নারী সদস্যদের দলে অন্তর্ভূক্তিসহ নারী সদস্যদের দিয়ে নাশকতার পরিকল্পনা করছিলেন।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট