চট্টগ্রাম শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

ঋণের জালে জর্জরিত

সাগরে মাছ ধরা বন্ধে দিশাহারা বহু পরিবার

সৌমিত্র চক্রবর্তী, সীতাকু-

১০ জুলাই, ২০১৯ | ১:৩০ পূর্বাহ্ণ

সীতাকু-ে সাগরে মাছ ধরা বন্ধে চরম দুর্দিন পার করছেন ২০ হাজার জেলে নারী-পুরুষ। এতে তারা নতুন করে ঋণের জালে জর্জরিত হয়ে হতাশায় নিমজ্জিত।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি সরকার জেলেদের টানা ৬৫ দিন সাগরে মাছ ধরা নিষিদ্ধ করেছেন। এতে গত ২২ মে থেকে সাগরে যেতে পারছেন না সীতাকু- উপজেলার ১০টি জেলে পল্লীর প্রায় সাড়ে ৪ হাজার জেলে। এতে তাদের পরিবারের মোট ২০ হাজার সদস্য মানবেতর জীবনযাপন করছেন। বিকল্প কর্মসংস্থান না থাকায় জেলেরা সংসার চালাতে নতুন করে মহাজন, দাদনদার ও এনজিওদের কাছ থেকে ঋণ নিতে বাধ্য হচ্ছেন।
সরেজমিনে উপজেলার বারৈয়াঢালা, সৈয়দপুর, মুরাদপুর, বাঁশবাড়িয়া, কুমিরা, বারআউলিয়া, শীতলপুর, মদনহাট, মাদামবিবিরহাট, ভাটিয়ারী, সলিমপুর- ফৌজদারহাট জেলে পাড়া ঘুরে দেখা যায় মাছ ধরা বন্ধ থাকায় জেলেরা বেকার সময় কাটাচ্ছেন।
বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের জেলে সর্দার উপেন্দ্র জলদাশ বলেন, গত ২২ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত সরকার সাগরে ইলিশ মাছ ধরা নিষিদ্ধ করেছে। এ সময় আমাদেরকে মাসে মাসে কিছু চাল অনুদান দেবার কথা জানিয়েছে মৎস্য বিভাগ। কিন্তু এ সময়টা আমাদের উপার্জনের অন্যতম সময়। জুন থেকে আগস্টই হলো ইলিশের মৌসুম। এ সময় মাছ ধরে আমরা সারাবছর সংসার চালাই এবং ভবিষ্যতের জন্য অর্থ সঞ্চয় করে রাখি। কিন্তু এবার সরকারের এ ঘোষণায় আমরা বিপাকে পড়ে গেছি। এর প্রতিবাদে আমরা মহাসড়ক অবরোধ করেছি এবং জেলা প্রশাসক স্যারের সাথে মিটিং করে সমস্যার কথা জানিয়েছি। তারা আমাদেরকে মাছ ধরার অনুমতির বিষয়ে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত দেবেন বলে জানান। কিন্তু এখনো আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত আসেনি। এদিকে ঘোর মৌসুমে মাছ ধরার অনুমতি না পেয়ে আমরা চরম বিপদে পড়েছি।
এদিকে জেলেদের এ অবস্থার বিষয়ে জানতে চাইলে সীতাকু- উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা বলেন, আসলে ৬৫ দিন সাগরে ইলিশ ধরা বন্ধের এ ঘোষণা ২০১৫ সালের। কিন্তু এতদিন এটি এ এলাকায় বাস্তবায়ন হয়নি। এখানে ২২ দিন মাছ ধরা বন্ধ থাকত। জেলেরা সেই ধারণা নিয়েই চলছিল। এইবার যখন সরকারি নির্দেশে আমরা এই ৬৫ দিন বন্ধ বাস্তবায়ন করতে যাই, তখনই সমস্যার সৃষ্টি হয়। সরকার প্রতি মাসে জেলেদের চাল দিতে চেয়েছে। বরাদ্দও দিয়েছে। কিন্তু সীতাকু-ের জেলেরা তা গ্রহণ না করে মহাসড়ক বন্ধ করে আন্দোলন করে। তিনি আরো বলেন, এই বন্ধ জেলেরা মেনে চললে পরবর্তীতে প্রত্যেক জেলে অনেক বেশি পরিমাণ মৎস্য আহরণের সুযোগ পাবে। তাই সরকারের এই নির্দেশনা মেনে চলার জন্য পরামর্শ দেন তিনি।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট