এমনিতে তিনি নিজের ভাবনা প্রকাশ করতে চান না অনেক সময়ই। ব্যক্তিগত বা পারিবারিক জীবন তো নয়ই। সেই লিটন কুমার দাস হঠাৎই একটু অন্যরকম। বিপিএলে এবার দারুণ ফর্মে আছেন। রানের ¯্রােতই হয়তো খুলে দিল তার মনের আগল। জানালেন, বিয়ের পর নিজেকে অনেক পরিণত মনে হয় তার। বাংলাদেশের ক্রিকেটে সময়ের সবচেয়ে প্রতিভাবানদের একজন লিটন। তবে তার সেই প্রতিভার প্রতিফলন জাতীয় দলের হয়ে পারফরম্যান্সে পড়ে মাঝে মধ্যে। এমনকি বিপিএলেও তার পারফরম্যান্স ছিল যাচ্ছেতাই।
এবারের আগে প্রতিযোগিতাটিতে ৪০ ইনিংস খেলে রান ছিল ৬৪১, গড় কেবল ১৬.৪৩! সেই লিটন এবার বিস্ময়কর রকমের ধারাবাহিক। নতুন দল রাজশাহী রয়্যালসের হয়ে ১২ ইনিংসে ৪২২ রান করেছেন ৩৮.৩৬ গড় ও ১৩৯.৭৩ স্ট্রাইক রেটে। লিটনকে নিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেটের মূল হতাশা তার মানসিকতা নিয়ে। ভালো খেলতে খেলতেই খেই হারানো। পরিপক্কতার ছাপ প্রায়ই রাখতে না পারা। ধারাবাহিক পারফরম্যান্স দেখাতে না পারা। এবার লিটন কিভাবে এমন ধারাবাহিক? গতকাল চট্টগ্রামের বিপক্ষে ম্যাচ জেতানো ইনিংস খেলার পর লিটন শোনালেন ধারাবাহিকতার রহস্য। ‘আসলে অনেক সময় নিজের মাথাটা বদলে ফেলতে হয়। বিয়ের পর মাথা খুলেছে। আগে বেশি আগ্রাসী ছিলাম। সংসার জীবনে যাওয়ার পর সাইলেন্ট হয়েছি। বুঝতে শিখেছি। বিয়েটা আমার জন্য সৌভাগ্যেরও হতে পারে।’ গত জুলাইয়ে দেবশ্রী বিশ্বাস সঞ্চিতার সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন লিটন। জানালেন, তারপর থেকেই বদলে গেছে তার মনোজগত। ‘আমি খুব ভাগ্যবান যে কম বয়সে বিয়ে করে ফেলেছি। বিয়ে ব্যাপারটি আমার পরিণতিবোধ আরও বাড়িয়েছে। আমি নিজে সেটি অনুভব করি, জানি না অন্যরা কেমন বোধ করে।’ ‘আমি যখন ২০১৬-১৭ সালে খুব খারাপ ক্রিকেট খেলেছি, তখন আমার পরিণতিবোধ বেড়েছে।
কারণ কখনও বাজে ফর্মে ছিলাম না। কিন্তু বড় রান আসেনি। তখন জীবনে অনেক শিখেছি। ঠেকেছি ও শিখেছি। পাশাপাশি বিয়ের পর পরিণতিবোধ বেড়েছে। ’ আফিফ হোসেনের প্রসঙ্গ উঠতেই হাসি দেখা গেল লিটন দাসের মুখে। মাঠে দুই তরুণের উদ্বোধনী জুটি জমেছে বেশ। রাজশাহী রয়্যালসের কিপার-ব্যাটসম্যান জানালেন, আফিফের সঙ্গে ব্যাটিং উপভোগ করছেন তিনি। ‘আফিফের সঙ্গে ব্যাটিং করে মজা পাচ্ছি। সত্য কথা বলতে-টি-টোয়েন্টিতে একটু আক্রমণ করতেই হয়। একটু মারতে হবে, ঝুঁকি নিতে হবে। এ দায়িত্বটা অফিফই নিয়েছে। প্রথম থেকেই আক্রমণাত্মক খেলছে। আমি ‘বল টু বল’ খেলার চেষ্টা করছি।’