চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

জনসনের নিরঙ্কুশ জয়ে আতঙ্কিত যুক্তরাজ্যের মুসলিমরা

অনলাইন ডেস্ক

১৫ ডিসেম্বর, ২০১৯ | ৪:৫৩ অপরাহ্ণ

ব্রিটেনের আগাম সাধারণ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় পেয়েছে বরিস জনসনের নেতৃত্বাধীন কনজারভেটিভ পার্টি (রক্ষণশীল দল)।

যেখানে সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজন ৩২৬টি আসনের সেখানে ৬৫০টি আসনের মধ্যে ৩৬৪টিই নিজের করে নিয়েছে রক্ষণশীলরা।

কনজারভেটিভ পার্টির এই নিরঙ্কুশ জয়ে ব্রিটেনে ইসলামভীতি বৃদ্ধির আশঙ্কা করা হচ্ছে।

এক বিবৃতিতে মুসলিম কাউন্সিল অব ব্রিটেন (এমসিবি) এই আশঙ্কা প্রকাশ করে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে, বরিস জনসন ব্রিটেনের মুসলিমদের প্রতি বৈষম্যপূর্ণ আচরণ থেকে তার দলকে বের করে আনবেন এবং অন্য ধর্মীয় ব্রিটিশ নাগরিকদের মতোই মুসলিমদের সমান চোখে দেখবেন।

শুক্রবার এমসিবির সেক্রেটারি জেনারেল হারুন খান বলেন, ‘জনসনের সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনে ব্রিটেনজুড়ে মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে।’

এর কারণ হিসেবে তিনি জানান, ‘নির্বাচনি প্রচারের সময়ও কনজারভেটিভ পার্টির ধর্মীয় গোঁড়ামির বিষয়টি দেখা গেছে। তাদের মধ্যে ইসলামভীতি রয়েছে। এতে আমরা উদ্বিগ্ন। এখন সেই দলটির হাতে ব্যাপক ক্ষমতা চলে গেছে। আমদের এখন এটাই আর্জি যে, ইসলাম বিদ্বেষ থেকে সরে এসে যেন জনসন ও তার দল সব ব্রিটিশ নাগরিককে এক চোখে দেখেন।’

তিনি বলেন, ‘আমরা আন্তরিকভাবে আশা করি যে প্রধানমন্ত্রী সব বর্ণবাদকে সমূলে দূর করে ঐক্যবদ্ধ এক জাতি গঠনের ওপর জোর দেবেন।’

উল্লেখ্য, শুধু রক্ষণশীল দল বলেই নয় ব্যক্তিগতভাবেই বরিস জনসনকে ইসলামবিদ্বেষী বলে মনে করেন অনেক ব্রিটিশ নাগরিক।

এর কারণ তিনি নিজেই। এক প্রবন্ধে জনসন বোরকাকে ‘নিপীড়নমূলক’ পোশাক আখ্যা দিয়েছিলেন।

এরপর নভেম্বরে বরিস জনসন ও তার দলের বিরুদ্ধে ইসলামবিদ্বেষীর অভিযোগ তুলে এমসিবি।

সে সময় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের আগে দলের মধ্যে মুসলিমবিরোধী ঘৃণার তদন্ত শুরুর প্রতিশ্রুতি দেন বরিস জনসন।

তবে তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর এই প্রতিশ্রুতি থেকে সরে আসেন ও সমালোচনার মুখে পড়েন জনসন।

সে সময় মুসলিমবিরোধী ঘটনার স্বাধীন তদন্তের দাবিতে প্রচারণা চালানো টরি পার্টির সাবেক চেয়ারপার্সন ব্যারনেস সাঈদা ওয়ারসি বলেন, ‘আমরা এককভাবে দলের মধ্যে ইসলামভীতি ও বর্ণবাদ রুখতে ব্যর্থ হয়েছি। কনজারভেটিভ পার্টিতে ব্রিটিশ মুসলিমদের জন্য পরিবেশ আসলে বৈরী।’

সাঈদা ওয়ারসির এমন বক্তব্যের পর লেবার পার্টির ছায়া স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আফজাল খান এই সিদ্ধান্তকে যুক্তরাজ্যজুড়ে ‘মুসলিমদের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা’ বলে অভিহিত করেন।

এছাড়াও এমসিবি সংগঠনটি জানায়, ‘ব্রিটেনে যে ইসলামবিদ্বেষ ছড়ানো হচ্ছে সে বিষয়টি নাকচ করে দিয়ে শঠতার আশ্রয় নিচ্ছেন জনসন। বরিস জনসন ও তার রক্ষণশীল দলই ‘ইসলাম বিদ্বেষ’কে বৈধতা দিয়েছে এবং তা বাড়তে সাহায্য করেছে। এমন বর্ণবাদ নির্মূল করতে যেসব পদক্ষেপ নেয়া জরুরি তা নিচ্ছে না সরকার। ’

এরপর ইসলামবিদ্বেষ বিষয়ে রক্ষণশীল দলকে পরিশুদ্ধ করার প্রক্রিয়া শুরু করতে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানায় ওই সংগঠনটি।

এদিকে নির্বাচনে বিপুল ব্যবধানে জয়ের পর লন্ডনে দেয়া এক ভাষণে বরিস বলেন, ভোটারদের আস্থার প্রতিদান দিতে তিনি দিন-রাত কাজ করবেন। এই জয়ের মাধ্যমে তিনি ব্রিটেনকে ইইউ থেকে বের করে আনবেন। এখানে কোনো ‘যদি, কিন্তু’ নেই। বরিস বলেন, মানুষ পরিবর্তন চায়। তাদের হতাশ করা উচিত নয়, হতাশ করব না।

বরিস জনসনকে অভিনন্দন জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এক টুইটে তিনি বলেন, ব্রেক্সিটের পর ব্রিটেন ও যুক্তরাষ্ট্র স্বাধীনভাবে বড় ধরনের বাণিজ্য করতে পারবে। এই চুক্তি অনেক বড় ও আকর্ষণীয় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।সূত্র: বিবিসি

পূর্বকোণ/টিএফ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট