চট্টগ্রাম মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

গুজব নয়, বাস্তবতায় বিশ্বাসী হোন

২৫ নভেম্বর, ২০১৯ | ১:৫৫ পূর্বাহ্ণ

গুজবে কান দিতে নেই। গুজব মানুষের বিশ্বাসে ফাটল ধরায়। একটা কথা হচ্ছে পজেটিভে পজেটিভ আনে, নেগেটিভে নেগেটিভ। গোয়েবলসীয় একটা বিশ্বাস হলো একটা মিথ্যাকে দশবার বললে নাকি সত্য হয়ে যায়। যদিও এটা নেগেটিভ কিন্তু এটাকে চর্চা করার লোক নেহায়েত কম নয়, এর মধ্যে যদি কোন কর্তাব্যক্তি শামিল হয়। ব্যাপারটা কোথায় গিয়ে দাঁড়ায় একটু ভাবুন। কোন কর্তাব্যক্তি যদি গোয়েবলসীয় পদ্ধতি অনুসরণ করে। তার অধিনস্ত কেউ এরকম কিছু করে তাহলে আশ্চর্য হওয়ার কোন কারণ নেই। কারণ নেতা কোন কিছু করলে কর্মীদের উপর প্রভাব কোন না কোনভাবে পড়ে। এদেশের অতিতে অনেক গুজব খুব সাড়া ফেলেছে যা চর্বিত চর্বণ করতে চাই না। গুজব মানে একপ্রকার সরল মনে ধোঁকা দেয়া। এক্ষেত্রে আক্রান্ত হচ্ছে সাধারণ মানুষ। তারা অতো বেশি খবরাখবরও রাখে না যা তদন্ত পর্যন্ত অপেক্ষা করবে। এক্ষেত্রে ২য় বিশ্বযুদ্ধ কেন্দ্রিক একটি রেডিও অনুষ্ঠান সম্প্রচার করলে।

শ্রোতারা বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়েছে মনে করে ঘর-বাড়ি ছেড়ে পলাতে লাগল নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে। তখনো পর্যন্ত কোন যুদ্ধও শুরু হয়নি। গুজব কিন্তু পজেটিভ এর চেয়ে নেগেটিভ দিক বেশি। বাস্তব সত্য যে, একটা মিথ্যা যেভাবে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে, সত্য ততটুকু নয়। তবে অনেক রাজনৈতিক দল এটাকে ব্যবহার করতে দেখা যায়। গুজব প্রতিষ্ঠা করা গেলও ক্ষণিকের জন্যে। অচিরেই তার মুখোশ উন্মোচিত হয়ে যায়। সদ্যগুজব আমাদের গ্রামের বাজারে লবণের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে গুজবে কান দিয়েই সাধারণ মানুষ ৫/১০ টাকা বেশি দিয়েই লবণ ক্রয় করে দোকান খালি করেছে। এতে হলো কি এক শ্রেণির অসাধু চক্র সুবিধা হাসিল করেছে। লবণ তো বাহির থেকে আমদানি করতে হয় না। বরং বাহিরে বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করে আমাদের লবন। লবণ উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বে ২৭ তম। তারমধ্যে ৮০ভাগ লবণ উৎপাদন হয় কক্সবাজার জেলায়। গুজব থেকে রক্ষা পেতে করণীয়, সর্বাগ্রে দরকার সচেতনতা। সর্বক্ষেত্রে সচেতনতা বাড়াতে হবে এক্ষেত্রে রাস্ট্রযন্ত্রকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। এদেশের যত গণমাধ্যম আছে তারা কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সাইটগুলো অনেকটা হাতের নাগালে কোন নিউজ ভাইরাল হতে খুব বেশি সময় লাগে না। এইগুলোও গুরুত্বপূর্ণ পজেটিভ ভূমিকা রাখতে পারে। কোন গুজব ছড়ানোর সাথে সাথে তদন্ত কমিঠি গঠন করে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। জনগণকে সহায়তা করবার জন্যে এলাকা ভিত্তিক টিম গঠন করে দিতে হবে। যারা এসব গুজব ছড়ায় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা। অসাধু চক্র যারা ফায়দা লুটতে চেষ্টা করে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। মজুদদারি চক্র যারা জনগণের স্বাভাবিক জীবন দুর্বিষহ করে তুলছে তাদেরও আইনের আওতায় আনতে হবে। এক্ষেত্রে ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলতে হবে। সূরা হুজুরাতে এ ব্যাপারে স্পষ্ট ইংগিত দেয়া হয়েছে। সাধারণ জনগণের উচিত প্রশাসনের সহায়তা নেয়া। কোন কর্তাব্যক্তি বা প্রশাসনিক ব্যক্তির উচিত নয় যে, মিথ্যাকে মসলা দিয়ে সত্য বানানো। কারণ এরকম হলে মানুষের অসহায়ত্বের জায়গা সংকট দেখা দিবে। সহজে মানুষ বিভ্রান্ত হয়ে যাবে। অনেকসময় এমনও হতে পারে যে অরাজক পরিস্থিতি তৈরি হবে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে। সরকারের উচিত প্রত্যেকটা নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যদ্রব্যের দাম নির্ধারিত করে দেয়া। আপনার সন্তানকে সুশিক্ষা দিন।

পজেটিভ শিখান, মাথায় নেগেটিভ দিতে চেষ্টা করবেন না কখনোই। কারণ আপনি যেরকম ইনপুট দিবেন, আউটপুটও সেরকম পাবেন। পজেটিভ শিখুন,পজেটিভ বলুন এবং নিজেকে পজেটিভ রাখুন। পজেটিভ যখন সমাজে চর্চা করবেন তারাও একদিন পজেটিভ হবে।

মু সাঈদী আলম
গভর্মেন্ট টিচারর্স ট্রেনিং কলেজ,
চট্টগ্রাম।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট