চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

দুই বছর রাস্তা কাটবে ওয়াসা

মোহাম্মদ আলী

২৭ আগস্ট, ২০১৯ | ৩:১৮ পূর্বাহ্ণ

স্যুয়ারেজ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য পুরো শহরকে ৬টি জোনে ভাগ করা হয়েছে। তাতে জোন-১ এর অধীনে স্যুয়ারেজের ওপর প্রথম প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। এই জোনের মধ্যে রয়েছে নগরীর হালিশহর, সাগরিকা, সল্টগোলা ক্রসিং, শেখ মুজিব রোড, কদমতলী, মোগলটুলি, পাঠানটুলি, সদরঘাট, আগ্রাবাদ, দেওয়ানহাট, লালখান বাজার, নিউমার্কেট, কোতোয়ালী, জামালখান, আন্দরকিল্লা, জিইসিসহ বিভিন্ন এলাকা। প্রকল্পের জন্য এসব এলাকায় রাস্তা কেটে সর্বনি¤œ এক ফুট থেকে সর্বোচ্চ ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি ব্যাসের পাইপলাইন বসানো হবে। ২০২১ সালের শুরুতে এ কাজ শুরু হবে। চলবে টানা দুই বছর। তাই এখন থেকে জনভোগান্তির বিকল্প ব্যবস্থা না নিলে প্রকল্প নিয়ে জনমনে বিরূপ মনোভাবের আশঙ্কা রয়েছে।

প্রসঙ্গত, চট্টগ্রাম ওয়াসায় বর্তমানে যেসব প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে তাতে পাইপলাইন বসানো হচ্ছে সর্বোচ্চ ৪ ফুট ব্যাসের। যা স্যুয়ারেজ প্রকল্পের পাইপলাইনের তুলনায় ১ ফুট ৪ ইঞ্চি কম।

সূত্রটি জানায়, প্রকল্পটি কারিগরি পরামর্শক নিয়োগে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত কমিটির চূড়ান্ত অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। ওয়াসার বোর্ড সভায় অনুমোদনের পর এ সংক্রান্ত কাগজপত্র মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়েছে। আগামী সেপ্টেম্বরে এটি চূড়ান্ত অনুমোদনের সম্ভাবনা রয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, প্রকল্পটি ২০১৮ সালের ৭ নভেম্বর একনেকে অনুমোদন পায়। তিন হাজার ৮০৮ কোটি ৫৮ লাখ ৭৭ হাজার টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন শেষ হলে চট্টগ্রাম শহরে এটিই হবে স্যুয়ারেজের ওপর ওয়াসার প্রথম প্রকল্প। বাংলাদেশ সরকার ও ওয়াসার যৌথ অর্থায়নে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

ওয়াসা সূত্র জানায়, প্রতিষ্ঠার ৫৭ বছর পর স্যুয়ারেজের ওপর প্রথম প্রকল্প তৈরি করে চট্টগ্রাম ওয়াসা। এর আগে ২০১৫ সালের জুন থেকে ২০১৭ সালের জুন পর্যন্ত দুই বছর ধরে নগরীর ড্রেনেজ ও স্যুয়ারেজ নিয়ে একটি মাস্টার প্ল্যান তৈরি করে সংস্থাটি। এর মধ্যে ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনা প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এবং স্যুয়ারেজ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে ওয়াসা। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে নগরীর ২০ লাখ মানুষ স্যুয়ারেজের আওতায় আসবে বলে জানিয়েছেন ওয়াসার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা। এর আগে চট্টগ্রাম ওয়াসা নগরীতে শুধু পানি সরবরাহ করেছে। স্যুয়ারেজ বা পয়ঃনিষ্কাশন প্রকল্প গ্রহণ করতে পারেনি। ওয়াসার স্যুয়ারেজের প্রকল্পটির নামকরণ করা হয় ‘চট্টগ্রাম মহানগরীর পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা স্থাপন প্রকল্প (প্রথম পর্যায়)।
এ প্রসঙ্গে প্রকল্প পরিচালক ও ওয়াসার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোহাম্মদ আরিফুল ইসলাম দৈনিক পূর্বকোণকে বলেন, ‘কারিগরি পরামর্শক নিয়োগে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত কমিটির চূড়ান্ত অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে চট্টগ্রাম ওয়াসার স্যুয়ারেজ প্রকল্প। ওয়াসার বোর্ড সভায় অনুমোদনের পর এ সংক্রান্ত কাগজপত্র মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়েছে।

প্রকৌশলী মোহাম্মদ আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘নগরীর হালিশহরে চট্টগ্রাম ওয়াসার ১৬৫ একর জায়গাতে পয়ঃনিষ্কাশন প্রকল্প স্থাপন করা হচ্ছে। প্রকল্পের অধীনে মোট ২০০ কিলোমিটার পাইপলাইন স্থাপন, ১৫টি পাম্প স্টেশন, ১৪৪ কিলোমিটার সার্ভিসলাইন করা হবে। ২০২১ সালের শুরুতে পাইপলাইন বসানোর প্রক্রিয়া শুরু হবে।

যার মাধ্যমে বাসাবাড়ির পয়ঃবর্জ্য সংগ্রহ করে পরিশোধনের পর তার পানি সাগরে ফেলে দেওয়া হবে। অবশিষ্ট কঠিন বর্জ্য দিয়ে কম্পোস্ট সার তৈরি হবে। এর জন্য তৈরি হবে দিনে ৮০ হাজার ঘনমিটার ধারণ ক্ষমতার একটি পয়ঃশোধনাগার এবং দৈনিক ৪৫০ ঘনমিটার ধারণ ক্ষমতার একটি ফিকেল স্লাজ শোধনাগার’।

প্রসঙ্গত, ১৯৬৩ সালে চট্টগ্রাম পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষ (সিওয়াসা) প্রতিষ্ঠিত হয়। কিন্তু ৫৭ বছরে ওয়াসা শুধুমাত্র পানি সরবরাহের প্রকল্প গ্রহণ করেছে। পয়ঃনিষ্কাশনের জন্য কোনো প্রকল্প গ্রহণ করতে পারেনি। ফলে নগরীর সব রকমের বর্জ্য সরাসরি নালা ও খাল হয়ে নদী ও সাগরে পতিত হচ্ছে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট