চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

জয়ের চিন্তাই আজকের ডিজিটাল বাংলাদেশ: প্রধানমন্ত্রী

অনলাইন ডেস্ক

২৭ জুলাই, ২০২১ | ২:২২ অপরাহ্ণ

করোনার কারণে গত ২৩ জুলাই স্থগিত হওয়া পাবলিক সার্ভিস দিবসের আয়োজন অনুষ্ঠিত হয় আজ। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশের যাত্রা শুরু হবার গল্প শুনিয়েছেন।

মঙ্গলবার (২৭ জুলাই) পাবলিক সার্ভিস দিবস উদযাপন ও জনপ্রশাসন পদক প্রদান অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে অংশ নিয়ে তিনি এ গল্প বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন,  ‘আজকে যেই ডিজিটাল বাংলাদেশে আমি আপনাদের সঙ্গে কথা বলছি। এটা জয়েরই ধারণা, জয়েরই চিন্তা। কারণ, ৮১ সালে এসে যখন বার বার গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করি। তখন বার বার আমাকে গ্রেপ্তার-গৃহবন্দি করা হয়েছে। তখন বাবার বন্ধু আজিজ সাত্তার কাকা জয় ও পুতুলকে স্কুলে ভর্তি করিয়ে দেন। স্কুল থেকেই জয় কম্পিউটার শিক্ষা নেয়। যখন ছুটিতে আসতো, কম্পিউটার নিয়ে আসতো। জয়ের কাছ থেকেই আমি কম্পিউটার শিখেছি। ৯১ সালে যখন পার্টির জন্য অনেক দামে কম্পিউটার কিনি, তখনই আমরা আলোচনা করি, কীভাবে দেশে কম্পিউটার শিক্ষা শুরু করা যায়।’

তিনি বলেন, ‘৯৬ সালে যখন আমরা সরকার গঠন করি, জয় আমাকে পরামর্শ দিলো কম্পিউটারের ওপর থেকে ট্যাক্স তুলতে হবে, দাম সস্তা করতে হবে। মানুষের কাছে সহজলভ্য করতে হবে, মানুষকে প্রশিক্ষণ দিতে হবে। তাহলেই মানুষ এটা শিখবে। সেভাবেই কিন্তু আমাদের ডিজিটাল বাংলাদেশের যাত্রা শুরু।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি আবার যখন সরকারে আসি, দেখি কেউই এটা ব্যবহার করতো না। আমিই নির্দেশ দেই, সব ফাইল যেন কম্পিউটার কম্পোজ হয়ে আমার কাছে আসে। এখন কিন্তু সে সুফল আমরা ভোগ করছি।’

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আজকের দিনটিও আমার বিশেষ দিন। ১৯৭১ সালের ২৩ মার্চ, পাকিস্তান দিবস। সেদিন বাংলাদেশের কোথাও পাকিস্তানের পতাকা উত্তোলন করেনি। (ধানমন্ডি) ৩২ নম্বরের বাড়িতে আমার বাবা বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করলেন। তখন আমি কেবল সন্তানসম্ভবা। আমি সাধারণত বাবার হাত-পায়ের নখ কেটে দিতাম, সেটা আমার নিয়মিত কাজ ছিল। সেদিন একমগ পানি নিয়ে বাবার নখ কাটতে বসলাম। সেদিন বাবা বললেন, হ্যাঁ, ভালোভাবে কেটে দে, কারণ পরে আর সুযোগ পাবি কি-না! তবে তোর ছেলে হবে, সে ছেলে স্বাধীন বাংলাদেশে হবে, তার নাম “জয়” রাখবি।’

২৫ মার্চের ভয়াল রাতের ঘটনা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের বন্দি অবস্থায় মেডিকেলে জয়ের জন্ম হয়। পরে বাচ্চা নিয়ে কারাগারে আসলে একজন পাকিস্তান সেনা অফিসার জিজ্ঞেস করে তার নাম কী? আমি বলি, জয়। বলে মানে কী? বলি, জয় মানে জয়, ভিক্টরি। তখন এই ছোট্ট শিশুকেও তারা গালি দেয়।’

তিনি বলেন, ‘আজ তার (জয়ের) জন্মদিন। ৫০ বছর বয়স হলো জয়ের। এই করোনার কারণে আমরা একসাথে হতে পারলাম না, এটা আরেকটা দুঃখ। আপনারা এই দিনটি স্মরণ করছেন, সেজন্য আপনাদের ধন্যবাদ জানাই।’

প্রশাসন নিয়ে সরকার প্রধান বলেন, ‘সরকার মানে জনগণের সেবক। সরকারি কর্মকর্তাদের যদি সঠিক দিকনির্দেশনা দেয়া যায়, কর্মপরিকল্পনা দেয়া যায়, তারা যে অসাধ্য সাধন করতে পারে সেটাই আজকে প্রমাণিত। তাদের মধ্যে যদি আত্মবিশ্বাস তৈরি করে দেয়া যায়, তাহলেই সব কাজ সঠিকভাবে করা সম্ভব। যাদের মাধ্যমে আমরা কাজ করবো, তাদের সঠিক প্রশিক্ষণ দেয়ার কাজটিও আমরা করেছি।’

করোনা ভ্যাকসিন নিয়ে তিনি বলেন, ‘সবাইকে ভ্যাকসিন দেবো। ইতোমধ্যে অনেক কিনেছি। যত টাকা লাগে আরও কিনবো। ভবিষ্যতে আমরা দেশেই ভ্যাকসিন তৈরি করবো। ইতোমধ্যে সম্মুখসারির যোদ্ধাদের পরিবার ও তাদের বাড়ির লোকজনকেও দিতে বলেছি।’

এদিন বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে জনপ্রশাসন পদক দেয়া হয়। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে পদক তুলে দেন মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। সভাপতির বক্তব্য দেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট