চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

নগরবাসীর শঙ্কাই সত্যি হলো

ইমরান বিন ছবুর

৭ জুন, ২০২১ | ১২:৩২ অপরাহ্ণ

অবশেষে নগরবাসীর শঙ্কাই সত্যি হলো। চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের কাজ চলমান থাকায় প্রায় সবগুলো খালের মুখে বাঁধ দেয়া হয়েছে। এই বাঁধের কারণে নগরীতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হতে পারে এমন আশঙ্কা ছিল নগরবাসীর মাঝে। গতকালের ৮৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতেই এই আশঙ্কা সত্যি হয়েছে।

আবহাওয়া দপ্তরের তথ্যমতে, গতকাল সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বৃষ্টি হয়েছে ৮৬ মিলিমিটার। জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের কাজ চলমান থাকায় কারণে ড্রেন ও খালে বিভিন্ন স্থানে প্রতিবন্ধকতায় পড়ে পানি। ফলে বৃষ্টির পানি আটকে নগরীর প্রায় সব এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। অন্যদিকে, চলমান বৃষ্টি থামলেই খালের মুখে দেয়া বাঁধ খুলে দেয়া হবে। তবে টানা বর্ষণ শেষ না হওয়ার আগে কোনভাবেই খালের বাঁধ খোলা যাবে না বলে জানিয়েছেন জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের পরিচালক বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন বিগ্রেড লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. শাহ আলী।

এক প্রশ্নের উত্তরে প্রকল্প পরিচালক বলেন, হঠাৎ করেই ভারী বর্ষণ শুরু হয়েছে। যার কারণে আমরা খালের মুখ থেকে বাঁধগুলো অপসারণ করতে পারিনি। আবহাওয়া অফিসের সাথে কথা বলে জানতে পেরেছি, আগামী কয়েকদিন বৃষ্টি হতে পারে। এই বৃষ্টি শেষ হলে আমরা খালের মুখের বাঁধগুলো খুলে দিব।

চলমান বৃষ্টিতে খালের বাঁধ না খোলার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বৃষ্টি না কমলে খালে স্কেভেটর প্রবেশ করানো যাবে না। আর এ বাঁধ স্কেভেটর ছাড়া কাটা যাবে না। বৃষ্টি একটু কমলেই আমরা বাঁধ অপসারণ করে দিব।

জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মূলত অল্প সময়ে বেশি বৃষ্টি হওয়ার কারণেই পানি যেতে কিছুটা সময় লেগেছে। যার ফলে নগরীর বিভিন্ন জায়গায় পানি উঠতে দেখা গিয়েছে। কিন্তু বৃষ্টি কমে যাওয়ার সাথে সাথে বিভিন্ন জায়গা থেকে পানি নেমে গিয়েছে। নগরীর কোথাও দীর্ঘস্থায়ী পানি ছিল না। আমরা যে ড্রেন এবং খালের কাজ করেছি তার সুফল পাচ্ছি। বিগত বছরগুলোতে আমরা দেখেছি, দীর্ঘক্ষণ বৃষ্টি হলে সহজে পানি নামতো না। বৃষ্টি শেষ হওয়ার কয়েকঘণ্টা পরেও বিভিন্ন জায়গায় পানি জমে থাকতো। ধীরে ধীরে যদি বৃষ্টি হয় তাহলে কোথাও জলাবদ্ধতা সৃষ্টি কিংবা পানি আটকাবে না। কিন্তু অল্প সময়ে বেশি বৃষ্টি হলে সেই পানি যেতে সময় লাগবে।

ড্রেন তৈরির কথা উল্লেখ করে শাহ আলী বলেন, আমরা প্রায় ৬০ শতাংশ ড্রেনের কাজ সম্পন্ন করেছি। বাকি ড্রেনের কাজ করতে পারলে আরো কম সময়ে পানি চলে যাবে। এছাড়া, ভূমি অধিগ্রহণ করে খালগুলো যদি আরো সম্প্রসারণ করতে পারি, তাহলে আর কোথাও পানি আটকাবে না।

দ্রুত পানি অপসারণের জন্য কাজ করছে কুইক রেসপন্স টিম : নগরীর বিভিন্ন জায়গায় ড্রেনের পানি দ্রুত অপসারণের জন্য কুইক রেসপন্স টিম কাজ করছে উল্লেখ করে লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. শাহ আলী বলেন, নগরীর বিভিন্ন জায়গায় যেখানে ময়লা-আবর্জনা জমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে, সেখানে আমাদের কুইক রেসপন্স টিম কাজ করছে। চারটি টিম নগরীর বিভিন্ন এলাকায় কাজ করেছে। প্রতিটি টিমে ১০ জন সেনাবাহিনীর সদস্য এবং ২৫ জন লেবার ছিল। এই টিমের সদস্যরা ড্রেনের মুখ থেকে ময়লা-আবর্জনা সরিয়ে দিয়ে পানির প্রবাহকে সচল রেখেছে। ভাসমান ময়লাগুলো সরিয়ে পানির প্রবাহ সচল রাখাই এই টিমের অন্যতম কাজ।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট