চট্টগ্রাম বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

বৌদ্ধমূর্তির বয়স নির্ধারণে প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগের প্রতিনিধি দল বান্দরবানে

বান্দরবান সংবাদদাতা

১৬ আগস্ট, ২০২০ | ১:২০ অপরাহ্ণ

বান্দরবানের ঐতিহ্যবাহী রাজগুরু বৌদ্ধ বিহারের হাজার বছরের পুরনো একটি বৌদ্ধ মূর্তির বয়স নির্ধারণে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের একটি প্রতিনিধি দল বান্দরবান সফর করেছেন।

প্রত্নতাত্ত্বিক অধিদপ্তরের আঞ্চলিক পরিচালক ড. মো. আতাউর রহমানের নেতৃত্বে চার সদস্যের প্রতিনিধি দল রবিবার সকালে রাজগুরু বৌদ্ধ বিহারের মূর্তিগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখেন। এ সময় সেখানে পার্বত্য মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি, বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা, আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য কে এস মং সহ বৌদ্ধ ভিক্ষু, মন্দির পরিচালনা কমিটি ও রাজ পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

বান্দরবানের রাজগুরু বুদ্ধ বিহারে প্রায় দুই হাজার বছরের পুরনো একটি বুদ্ধমূর্তি সংরক্ষিত রয়েছে। মায়ানমারের আরাকান থেকে এই মূর্তিটি তৎকালীন সময়ে বান্দরবানে নিয়ে আসা হয়। পরে এটি বোমাং সার্কেলের ৯ম বোমাং রাজা বোমাংগ্রী সানাইঞো মূর্তিটি রাজগুরু বৌদ্ধ বিহারে সংরক্ষণ করেন। ঐতিহ্যবাহী বুদ্ধমূর্তিটি কত পুরনো তা নির্ধারণে প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগের সদস্যরা বান্দরবানে রাজগুরু বৌদ্ধ বিহার পরিদর্শন করেন। তারা পুরনো বুদ্ধমূর্তিসহ বেশ কয়েকটি বুদ্ধমূর্তি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখেন।

রাজ পুত্র সাচপ্রু চৌধুরী জানান, মায়ানমারের আরাকান রাজ্যের সে সময়ের রাজা চন্দ্র সূর্যের সময়ে বুদ্ধমূর্তি তৈরি হয় বলে তারা বংশ পরস্পরায় শুনেছেন। তবে সেখান থেকে এক বৌদ্ধ সন্ন্যাসী মূর্তিটি বান্দরবানে নিয়ে আসেন। পরে নবম বোমাগ্রী সানাইঞো ১৮০০ সালের শেষ দিকে মূর্তিটি তার কাছ থেকে নিয়ে রাজগুরু বৌদ্ধ বিহারে স্থাপন করেন। বান্দরবান শহরের জাদি পাড়া এলাকায় ১৮৯৪ সালে তৎকালীন বোমাং রাজা রাজগুরু বৌদ্ধ বিহারটি স্থাপন করেন। এ মূর্তিটি বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের কাছে অত্যন্ত পবিত্র।

বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা জানান, বাংলাদেশ এ ধরনের তিনটি বুদ্ধ মূর্তি রয়েছে। যার মধ্যে একটি বান্দরবান রাজগুরু বুদ্ধ বিহারে সংরক্ষিত আছে। বুদ্ধ মূর্তির বয়স নির্ধারণ করা হলে এটি দেশের প্রত্নতাত্ত্বিক সম্পদ হিসেবে পরিচিতি লাভ করবে। তবে বান্দরবানে একটি ছোট আকারের হলেও প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর নির্মাণ করা যায় কিনা এ বিষয়ে চিন্তা-ভাবনা চলছে বলে তিনি জানান। প্রত্নতাত্ত্বিক অধিদপ্তরের আঞ্চলিক পরিচালক ড. আতাউর রহমান জানিয়েছেন মূর্তিটি দেখে এটি যে বেশ পুরনো তা অনুমান করা গেলেও কত পুরনো তা সহজে বলা যাচ্ছে না। প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের বেশ কিছু নিয়ম কানুন পালন করে মূর্তিটির কাছাকাছি বয়স নির্ধারণ করা যাবে।

তিনি জানান বাংলাদেশে প্রায় দেড় হাজার বছরের পুরনো বুদ্ধমূর্তি রয়েছে। এছাড়া ধাতুনির্মিত প্রায় এক হাজার বছরের পুরনো বুদ্ধমূর্তি ও পাওয়া গিয়েছে। তবে বান্দরবানে বুদ্ধমূর্তিটি বয়স নির্ধারণ করা গেলে এটি প্রত্বতত্ব সম্পদে পরিণত হবে বলে তিনি জানিয়েছেন। বান্দরবানে একটি প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর নির্মাণ করার জন্য তিনি কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানিয়েছেন।

পূর্বকোণ/পিআর

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট