চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

নির্বাচনের পোস্টার-ব্যানার ছেঁড়ার প্রতিবাদ

চমেক হাসপাতালে কর্মবিরতির ডাক কর্মচারীদের

নিজস্ব প্রতিবেদক

২৪ ডিসেম্বর, ২০১৯ | ১২:৩৯ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে কর্মবিরতির ডাক দিয়েছে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীরা। চতুর্থ শ্রেণির নির্বাচনের পোস্টার-ব্যানার ছেঁড়াকে কেন্দ্র করে এই কর্মসূচির ডাক দেয়া হয়। এর আগে সোমবার বিকেলে বিভিন্ন প্রার্থীর পোস্টার-ব্যানার ছেঁড়ার অভিযোগ ওঠে হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। এরপর রাতে নির্বাচনে অংশ নেওয়া সকল প্রার্থীর এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। একই সাথে প্রশাসনিক কর্মকর্তার অপসারণের দাবিও করেন কর্মচারীর নেতৃবৃন্দ।

চতুর্থ শ্রেণির নেতারা অভিযোগ করে বলেন, সোমবার বিকেলে কোনরকম পূর্ব নির্দেশনা ছাড়াই হাসপাতালের বাইরে থাকা সকল প্রার্থীর পোস্টার-ব্যানার ছিঁড়ে ফেলে দেন প্রশাসনিক কর্মকর্তা প্রণব কুমার হাওলাদার। নিজের হাতে ছেঁড়ার পাশাপাশি হাসপাতালের নিরাপত্তায় নিয়োজিত আনসার সদস্যদের দিয়েও বিভিন্ন গাছে লাগানো নির্বচানের পোস্টার-ব্যানার ছেঁড়া হয়। কিন্তু তাদের নিষেধ করা হলেও অধিকাংশ পোস্টার-ব্যানার ছেঁড়ে ফেলে দেন। এক পর্যায়ে কর্মচারীদের তোপের মুখে নিজ কক্ষে চলে যান এই কর্মকর্তা।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, কর্মচারীরা উত্তোজিত হলে প্রশাসনিক কর্মকর্তা তার নিজ কক্ষে চলে যান। পরে হাসপাতালের প্রশাসনিক ব্লকে গিয়ে ওই কর্মকর্তার কার্যালয় ঘেরাও করেন কর্মচারীরা। একই সাথে তার অপসারণের দাবিতে বিভিন্ন শ্লোগান দিতে থাকেন। পরে হাসপাতালের পরিচালকের আশ্বাসে কর্মচারীরা ফিরে আসেন।

নির্বাচনে সভাপতি প্রার্থী ও সাবেক সভাপতি রতন আলী পূর্বকোণকে বলেন, ‘নির্বাচনের আচরণবিধি অনুযায়ী সকল প্রার্থীরা তাদের পোস্টার-ব্যানার লাগিয়েছে। কিন্তু বিকেলে কোন নির্দেশনা ছাড়াই প্রণব বাবু (প্রশাসনিক কর্মকর্তা) নিজ হাতেই আমাদের পোস্টার-ব্যানার ছেঁড়ে ফেলেন। এর প্রতিবাদে সকল প্রার্থীর সিদ্ধান্তে মঙ্গলবার কর্মবিরতি পালন করবে চতুর্থ শ্রেণির সকল কর্মচারী। যতক্ষণ পর্যন্ত প্রশাসনিক কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করা না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত এই কর্মসূচি চলবে বলেও জানান তিনি’।

হাসপাতালের ইতিহাসে এমন ঘটনা এটাই প্রথম দাবি করে নির্বাচানে থাকা মানিক-ছাত্তার-রুপম পরিষদের সভাপতি প্রার্থী আব্দুল মতিন মানিক পূর্বকোণকে বলেন, ‘এর আগে কোন সময় এমন ঘটনা ঘটেনি। প্রতি দুই বছর পর চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের একটি মিলনমেলা হিসেবে পরিণত হয় এ নির্বাচন। কিন্তু নির্বাচনকে বানচাল করার জন্যই এমন ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি’।

বেলাল-নুরু-কুতুব পরিষদের সভাপতি প্রার্থী বেলাল হোসেন পূর্বকোণকে বলেন, ‘ঘটনার পর পরিচালক নিজেই এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিবেন বলে আমাদের জানিয়েছেন। এ বিষয়ে পরিচালক বরাবর লিখিতভাবে জানানো হবে। আমাদের একটাই দাবি- প্রশাসনিক কর্মকর্তা প্রত্যাহার। তা না হলে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমাদের কর্মবিরতি চলবে’।

এ প্রসঙ্গে হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহসেন উদ্দিন আহমেদ পূর্বকোণকে বলেন, ‘ঘটনার পর কর্মচারীদের আমি নিজেই বলে এসেছি, তারা লিখিতভাবে অভিযোগ দিলে আমি এর ব্যবস্থা নেব। কিন্তু যে কর্মবিরতির কথা বলছে এটা মোটেও উচিত নয়। এরপরও তারা যদি কর্মসূচি পালন করে, তাহলে নির্বাচনেই বাতিল করা হবে। প্রয়োজনে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি’।

প্রসঙ্গতঃ আগামী ২৬ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচনে ২১ পদের বিপরীতে দুটি প্যানেল ও সাত স্বতন্ত্র প্রার্থীসহ সর্বমোট ৪৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। নির্বাচিতরা আগামী দু’বছরের জন্য দায়িত্ব পালন করবেন।

 

 

 

পূর্বকোণ/আর-আরপি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট